পাতা:বাঁশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
দারােগার দপ্তর, ১৬৬ সংখ্যা।

 আমাদিগের এই অবস্থা দেখিয়া, প্রধান কর্মচারী সাহেবও ঐ ঘরের বাহিরে আসিবেন ও আমাদিগের সকলকেই সেই স্থান হইতে দূরে গমন করিতে কহিলেন। তাঁহার কথা শুনিয়া সকলেই সুদূরে গমন করিল, কেবল আমি তাহার পশ্চাতে রহিলাম। সাহেব তাহার পকেট হইতে একটা পাঁচনলা পিস্তল বাহির করিয়া, ঐ সর্পের মস্তক লক্ষ্য করিয়া দূর হইতে এক গুলি করিলেন। কিন্তু ঐ গুলি ব্যর্থ হইয়া গেল। পুনরায় দ্বিতীয়বার গুলি করিলেন, তাহাও ব্যর্থ হইল। তৃতীয় গুলিতে উহার মস্তক চূর্ণ হইয়া গেল, কিন্তু তাহার বিক্রমের কিছুমাত্র হ্রাস হইল না, সেই মস্তকহীন সর্প সেই ঘর আলোড়িত করিতে লাগিল। তখন আমরা উভয়ে দুই গাছি মোটা লাঠী হস্তে ঐ ঘরের ভিতর প্রবেশ করিলাম ও লগুড়াঘাতে ঐ সর্পের জীবন নাশ করিলাম।

 প্রাণকৃষ্ণ বাবুকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে পাঠাইয়া দিলাম। তিনি হাসপাতালে গমন করিলে ঐ ঘরের ভিতর উত্তমরূপে অনুসন্ধান করিলাম, কিন্তু আর সর্প দেখিতে পাইলাম না; তাহাদিগের আহারীয় দুগ্ধ ও রম্ভা প্রভৃতি স্থানান্তরিত করিয়া ফেললাম। দুইটা বাঁশের ঝুড়ি শূন্য অবস্থায় দেখিতে পাইয়া বুঝিলাম, সর্প দুইটা উহাতেই রক্ষিত হইত।

 হাসপাতালে ডাক্তারগণ উহাকে বাঁচাইবার নিমিত্ত অনেক চেষ্টা করিলেন, কিন্তু কোনরূপেই কৃতকার্য হইতে পারিলেন না। কেবল একবারমাত্র প্রাণকৃষ্ণের জ্ঞান হইয়াছিল, তাহাও অতি অল্প সময়ের নিমিত্ত। সেই সময় তিনি ডাক্তারের সমক্ষে কেবল এইমাত্র বলিয়াছিলেন যে, “অর্থের নিমিত্ত আমি যে কার্য্য করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলাম, তাহার উপযুক্ত ফল পাইয়াছি। সর্পের দ্বারা