পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sఫిరి বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড জুলাই মাসের শেষের দিক হতে শুনলাম যাদেরকে গাড়ীতে করে নিয়ে যায় রাতে বহু দূরে নিয়ে অপারেশন স্পটে যাদেরকে ধরে আনতো তাদেরকে হাত-পা পিটিয়ে ভেঙ্গে ফেলতো। তারপর শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে দিত এবং গুলি করে হত্যা করতো। আগষ্ট মাসের ২/৩ তারিখে আমাদের ১০/১২ জনকে সেনানিবাসের মডেল প্রাইমারীর এক ঘরে নিয়ে যায়। এখানে নিয়ে আসার পর শুনলাম এর আগে যাদেরকে হত্যা করেছে তাদের কোন তালিকা বা হিসাব নেই। অসংখ্য মানুষকে তারা হত্যা করেছে ঐ সময়। এপ্রিলে যাদেরকে ধরেছিল একমাত্র আমিই বেঁচে ছিলাম। এখানে আসার পর খাওয়া দাওয়া একটু ভালো হলো। মারধর কর করতে থাকে। আগষ্ট মাসের ১২/১৩ তারিখ ইনটারোগেশনের জন্য নিয়ে যেত এবং নানা কথা- যেমন বিহারী হত্যা করেছি, পাকসেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, অস্ত্র যুগিয়েছি ইত্যাদির কথা লিখিয়ে আমাদের দিয়ে সই করিয়ে নেয়। চিৎ করে শুইয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বলতোম, একটু হেললে লাঠি দিয়ে পিটাতো। তিন দিন ঐ ভাবে অত্যাচার চালায় অমানুষিক। সেপ্টম্বরের শেষ অথবা অক্টোবর মাসের প্রথমে আমার বিরুদ্ধে সামরিক কেসের চার্জ নিয়ে একটি কপি দেয় এবং তার পরপরই জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়। ঢাকা থেকে আরও অতিরিক্ত কেস আমার বিরুদ্ধে আসে। আমার সাথে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট সানাউল হক, ইন্সপেক্টর আক্তার চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ, ডাঃ আনিসুজ্জামান এম, বি, বি, এস, অনিসুর রহমান ইত্যাদি লোকদের বিরুদ্ধে মামলা ওঠে। অক্টোবর মাস থেকেই ম্যাজিষ্ট্রেট সানাউল হক সাহেবের কেস ওঠে। দুটো হিয়ারিং হবার পর কেস বন্ধ হয়ে যায়। ২৮শে নভেম্বর চিঠি পেলাম আমি চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছি। মুক্তি পাই ২৮শে নভেম্বর। আমি মুক্তি পেয়ে বাসাতে অসি। আমার দেশের বাড়ী সব পুড়িয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়। আমার আমি শুনতাম দৈনিক বিভিন্ন স্থান থেকে মেয়েদের ধরে আনতো এবং সেনানিবাসের ২/৩টি স্থানে রেখে বিভিন্ন সময় ইচ্ছানুসারে তাদেরকে ভোগ করতো। স্বাক্ষর/বি, জামান ১৪/৭/৭৩