পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: অষ্টম খণ্ড
২৮১

॥ ২২৭॥

মোঃ অলি আহমদ

গ্রাম- পূর্ব গোমদন্তী

থানা-বোয়ালখালী

জেলা- চট্টগ্রাম

 ১৩ই আগষ্ট মুক্তিবাহিনী ও গেরিলারা ১৪ই আগষ্টের পাকিস্তান দিবস বানচাল করার জন্য বালুর ঘাট দোহাজারী রেল লাইনে গোমদন্তী রেল ষ্টেশনের কালুর ঘাটের নিকট আউট সিগন্যালের কাছে মাইন পাতিয়া রাখে রাত্রি বেলায়। রাত ৫টা সময় পাক ফৌজ পটিয়ার দিকে রেল লইয়া যাইতে ইঞ্জিন উড়িয়া যায় এবং রেল লাইন ধ্বংস হয়। ১৪ই আগষ্ট সকালে পটিয়া এবং কালুর ঘাট হইতে আরো মিলিটারী আসিয়া রাজাকারদেরসহ আমাদের গ্রাম ঘেরাও দেয়। তাহাদের তিনজন লোক আসিয়া আমাকে ধরিয়া হাড়মোড়া করিয়া হাত বাঁধিয়া রাইফেল দিয়া মারিতে মারিতে গাড়ীতে উঠায়। তখন আমি, নুর আহমদ, আব্দুল মজিদসহ মোট ৫৭ জনকে হাত ও কোমর বাঁধা অবস্থায় গাড়ীতে তোলা হইতেছে এবং গাড়ীতে তুলিয়া বেদম মার মারিয়াছে। পটিয়ায় লইয়া যাইয়াও বেদম মার— রাইফেল দিয়া মারায় আমি অজ্ঞান হইয়া পড়িয়াছিলাম। জ্ঞান হইলে দেখি সবাইকে সারিবদ্ধভাবে গুলি করিয়া মারার অবস্থা হইয়াছে। এমন সময় কালুরঘাট হইতে মেজর রশিদ আসিয়া আমার কাছ হইতে মুচলেকা লেখাইয়া লয় যে আমাদের গ্রামের পাশের রেল লাইন আমাদের পাহারা দিতে হইবে। কোন ক্ষতি হইলে আমাদের সবাইকে গুলি মারা হইবে। নিজেদের জান বাঁচানোর জন্য কাগজে সই দিয়া সন্ধ্যার একটু আগে মুক্ত হইয়া সবাই বাড়ী ফিরি। ৫মাস ভোগার পর সারিয়া উঠি কিন্তু কাজ করিয়া খাইতে পারি না।

স্বাক্ষর/-

মোঃ অলি আহমদ

২৯/৪/৭৩