পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খণ্ড
৩৭২

 সে আজও কুমিল্লায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আলীমকে খুঁজে বের করা হলে আরো তথ্য উদঘাটিত হবে বলে স্থানীয় জনসাধারণ মনে করেন। জুতো মেরামতকারী মনসুর আলী আমাকে জানিয়েছে যে, ১১৪ নং ব্রিগেডের খান সেনারা বহু মহিলাকে এমন কি কোলে নবজাতসহ মহিলাদেরকে ক্যাণ্টনমেণ্টে ধরে এনেছে। এদের ভাগ্যে কি পরিণতি ঘটেছে তা সে জানে না সামরিক ছাউনীর পাশে দ্বিতল ইস্পাহানী পাবলিক স্কুলের উপরের সব কয়টি কক্ষে বহু দিন ধরে নির্যাতিত মহিলারা বন্দী ছিলেন। তাদের অনেকের আর্তচীৎকারে আশপাশের লোকজন শিউরে উঠতো বারবার। মিত্র বাহিনী কুমিল্লা ক্যাণ্টনমেণ্ট থেকে ৬০/৭০ জন লাঞ্ছিতা মহিলাকে উদ্ধার করেছে বলে কোতোয়ালী পুলিশ সাব ইনেসপেক্টর বজলুর রহমান আমাকে জানিয়েছেন। তাছাড়া ঐ সময় আরো অনেকে পালিয়েও গেছে। কুমিল্লা কোতোয়ালী পুলিশের মতে শধু মাত্র সামরিক ছাউনীতেই চার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

 ইস্পাহানী পাবলিক স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ ওয়ালীউল্লাহ ক্যাণ্টনমেণ্ট স্কুলের অবাঙ্গলী শিক্ষককে একদিন আলোচনা করত শুনেছেন এখানে ত্রিশ হাজার বাঙ্গালীকে নিধন করা হয়েছে।

 ঐ তিন শিক্ষক হচ্ছে, মঞ্জুর, সাইদ ও সোলেমান। মঞ্জুর আর সোলেমান ত্রিশ হাজার বাঙ্গলীকে হত্যা করার ঘটনা সানন্দে প্রকাশ করার সময় সাইদ মন্তব্য করেছিল ‘ইয়ে কুছ নেহী, মামুলী হ্যায়’। পশুদের কাছ থেকে অন্য কোন মন্তব্য আশা করা যায় কি?