পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՖbrՆ) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড এরপর আর ভাগীরথী ওদের ক্যাম্পে যায়নি। ওরাও বুঝেছে, এটা তারই কীর্তি। কীতিমানরা তাই হুকুম দিল জীবিত অথবা মৃত ভাগীরথীকে যে ধরিয়ে দিতে পারবে তাকে নগদ এক হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। কিন্তু ভাগীরথী তখনও জানতো না ওর জন্য আরও দু:সহ ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। একদিন রাজাকারদের হাতে ধরা পড়লো ভাগীরথী। তাকে নিয়ে এল পিরোজপুর সামরিক ক্যাম্পে। খান সেনারা এবার ভাগীরথীর উপর তাদের হিংসতার পরীক্ষার আয়োজন করলো | এক হাটবারে তাকে শহরের রাস্তায় এনে দাঁড় করানো হলো জনবহুল চৌমাথায়। সেখানে প্রকাশ্যে তার অঙ্গাবরণ খুলে ফেলল কয়েকজন খান সেনা। তারপর দু’গাছি দড়ি ওর দু’পায়ে বেঁধে একটি জীপে বেঁধে জ্যান্ত শহরের রাস্তায় টেনে বেড়াল ওরা মহাউৎসবে। ঘন্টখানেক রাজপথ পরিক্রমার পর আবার যখন ফিরে এল সেই চৌমাথায় তখনও ওর দেহে প্রাণের স্পন্দন রয়েছে। এবার তারা দু’টি পা দু’টি জীপের সাথে বেঁধে নিল এবং জীপ দটিকে চালিয়ে দিল বিপরীত দিকে। ভাগীরথী দ’ভাগ হয়ে গেল। সেই দ’ভাগে দু’জীপে আবার শহর পরিক্রমা শেষ করে জল্লাদ খানরা আবার ফিরে এল সেই চৌমাথায় এবং এখানেই ফেলে রেখে গেল ওর বিকৃত মাংসগুলো। একদিন দু’দিন করে মাংসগুলো ঐ রাস্তার মাটির সাথেই একাকার হয়ে গেল এক সময়। ংলামায়ের ভাগীরথ এমনিভাবে আবার মিশে গেল বাংলার ধূলিকণার সাথে। কেবল ভাগীরথী নয়, আরও দু’জন মুক্তিযোদ্ধাকেও ওরা এমনি করে পিরোজপুর শহরে হত্যা করেছে।