পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8の° বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ কুমিল্লা ও রাজশাহীতে (রাজশাহী সং ৬ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ বিশ্ববিদ্যালয়) গণহত্যার স্বরুপ কুমিল্লা ও রাজশাহীতে গণহত্যার স্বরুপ কুমল্লিা, ৫ই ফেব্রুয়ারী (বি, এস, এস)। বিভিন্ন সূত্রের খবর থেকে জানা গেছে, ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনী এবং তাদের অনুগত চররা বিগত ৯ মাস ধরে এখানে ত্রাসের রাজতু চালিয়ে কমপক্ষে ২০,০০০ লোককে হত্যা করে। হাজার হাজার বাড়ী পুড়িয়ে দেয় এবং অগণিত পরিবারকে গৃহহারা করে দথলদার বাহিনী বাংলাদেশ ভারতের সীমান্তের ৩ মাইলের মধ্যে সমস্ত সম্পত্তি এবং বাড়ীঘর জুলিয়ে দিয়েছে অথবা ংস করেছে। এ সব এলাকার মধ্যে ব্রাক্ষণবাড়ীয়া এবং আখাউড়া সবচাইতে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত। জেলার প্রায় সকল হাট-বাজার লুট ও ধ্বংস করাতে সারা জেলায় চরম আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ সম্পূর্ণ রুপে নির্ধারন করার কাজ সম্পন্ন হলে হত্যা এবং ধ্বংসের পরিমাণ বহুগণে বৃদ্ধি পাবে বলে আশাঙ্কা করা হচ্ছে। পাক হানাদার বাহিনী এবং অনুচররা বিভিন্ন হাট-বাজার, ঘরবাড়ী রেল এবং বাস থেকে বহুসংখ্যক যুবককে ধরে এনে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে সে সম্পর্কে এখনো কিছু বলা যায়নি। যাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে একমাত্র বিষ্ণুপুরের জনাব আলী আকবার নামে এক যুবক জীবন্ত ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন। বিএসএস-এর প্রতিনিধির নিকট তিনি জল্লাদ বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের কাহিনী বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এপ্রিল মাসের ৮ তারিখে তাদের বাড়ী ঘেরাও করে তল্লাসী চালান হয় এবং ২৩ বৎসর বয়স্ক বাসেতকে হত্যা করা হয় তার বাড়ী লুট করে সমস্ত কিছু সার্কিট হাউসে নিয়ে যায় এবং তাকেও ধরে নিয়ে যায়। সার্কিট হাউসে আরো ১২ জনকে ঐ সময় ধরে আনা হয় এবং সারারাত ধরে তাদের আটকে রাখা হয়। পরদিন সকালে চোখ এবং হাত বেঁধে ট্রাকে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। একটি গুদাম ঘরে তদদের নিয়ে আসা এবং চোখ খুলে দেওয়া হয়। সেখানে তিনি বহু হতভাগ্যকে পা বাঁধা হাত বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখতে পান। ঐ সব হতভাগ্যের মধ্যে শহরের নামকরা আইনজীবী শ্ৰী যতীন্দ্র ভদ্রকে তিনি দেখতে পান। তাঁর গায়ে যথেষ্ট ক্ষত চিহ্নও তিনি দেখেছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজশাহী হতে বা, স, স-র অপর খবরে প্রকাশ সুদীর্ঘ নয় মাস পাক বাহিনীর অত্যাচারের জুলন্ত দৃষ্টান্ত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যায়ের ৩ জন শিক্ষকসহ ১৮ জন পার্সোনেলের কর্মচারী হত্যা। পাক বাহিনীর হাতে বশ্বিবিদ্যালয়ের যেসব জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে তার মূল্যের পরিমাণ প্রায় ২২ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার জানান যে পাক বাহিনী কর্তৃক ধ্বংসকৃত জিনিসপত্রের মূল্যের পরিমাণ যথাযথ নিরুপণ করতে একটি কমিটি নিয়োগ করা হয়েছে। গত এপ্রিল মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পাক বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে বিভিন্ন হল এবং ষ্টাফ কোয়ার্টারে ক্যাম্প স্থাপন করে। প্রথমেই বর্বর বাহিনী শহীদ মিনারটি ধ্বংস করে দেয়।