পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88ど বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড কিন্তু পিশাচরা এতে আমাদের উপর বিক্ষুব্ধভাবে পোষণ করল। তারপর প্রতি মুহুর্তে মৃত্যুর দিন গুনছিলাম। এ ঘটনার কয়েকদিন পর আমাদের স্পীডবোট ড্রাইভার আতাহারকে ধরে নিয়ে অপর দিকের দালানে ৭দিন পর্যন্ত আটকিয়ে রাখে। আতাহারের নারকীয় মৃত্যু কাহিনী বলতে গিয়ে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জনাব খালেদ আশ্র সজল বাকরুদ্ধ কণ্ঠে বললেন-আমি ওকে বাঁচাতে পারলাম না। আমি জানতাম হয়তো আমরা কেউ বাঁচবো না। ভাবলাম অনুরোধ করলে হয়ত সাধারণ কর্মচারী হিসেবে ছেড়ে দিতে পারে। তাদের কেউ বাদ যাবে না বলে দৃঢ়কণ্ঠে জানায় এবং সে রাতেই ওকে মেরে ফেলে। তখন আমাদের নিশ্চিত মৃত্যুই ভেবেছিলাম। এমন কোন রাত ছিল না যে নরপশুরা দশ-বারোজনকে হত্যা না করেছে। বেয়নেট দিয়ে যে সর্বনাশ করেছে, কত নারী যে নিধন করেছে, কত হতভাগিনীকে উন্মাদে পর্যবসিত করেছে তার সীমা নেই। মনির হোসেন লুণ্ঠন চালিয়েছে নির্বিচারে। নিজে গ্রহণ করেছে স্বর্ণ, নগদ টাকা প্রভৃতি মূল্যবান জিনিস, আর তার অনুচরদের দিয়েছে বাকী মালামাল। এ ছাড়াও শান্তি কমিটির যোগসাজশে যাকে তাকে ধরে আটক করে, শান্তি কমিটির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের নগদ অর্থের বিনিময়ে দু’একজনকে ছেড়ে দিয়েছে। অনেক টাকা গ্রহণ করেও তাকে হত্যা করা হয়েছে। দুলারহাটের মোহাম্মদ উল্লাহ কন্ট্রাক্টর তাদের একজন। চরফ্যাশনের শান্তি কমিটির পাণ্ডা রাজাকার ও পুলিশ দিয়ে ওকে ধরিয়ে দেয়। এমনি করে সমগ্র মহকুমায় হিংস্র নখর বিস্তার করে পাশবিকতা আর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলো।