পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৫৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○○ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড খুলতে বলছেন। কিন্তু মওলানার কোন সাড়াশব্দ নেই। খানিক পর মওলানা ভিতর থেকে বললেন, ভয় পাবেন না। আপনি যান। আমি আছি। তিনি ফের উপরে ওঠার জন্য পা বাড়ালেন। এমন সময় আল-বদরের আদেশ ‘হ্যাণ্ডস আপ, আমাদের সাথে এবার চলুন।" “কি ব্যাপার কোথায় যাবো? প্রশ্ন করলেন ডাঃ চৌধুরী। “আমাদের সাথে চলুন।’ ‘প্যান্টটা পরে আসি। ‘কোন দরকার নেই।” আলবদররা তাঁকে ঘিরে ধরলো। আস্তে আস্তে তিনি মাইক্রোবাসের দিকে অগ্রসর হলেন। শহীদুল্লাহ কায়সার এমনিতে শহীদুল্লাহ কায়সার খুব কথা বলতেন। কিন্তু যেদিন যুদ্ধ শুরু হলো সেদিন থেকে তিনি চুপ৷ সারাদিন টেনশনে থাকেন। যুদ্ধের আগে তাঁকে অনেকে বাড়ী ছেড়ে চলে যেতে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তিনি রাজী হননি। কারণ তিনি ব্যস্ত ছিলেন একটি উপন্যাস রচনায়। তাই তিনি বলতেন, ‘যুদ্ধ আমাকে দেখতে হবে। কারণ তথ্যগুলো আমার উপন্যাসে লাগবে।” চৌদ্দই ডিসেম্বর। সকাল বেলায় দেখা গেল বিদেশী দূতাবাসের নম্বর প্লেট লাগানো একটি গাড়ী এসে শহীদুল্লাহ কায়সারের বাড়ী থেকে একটু দূরে দাঁড়ালো। অনেকক্ষণ গাড়ীটা সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে তারপর এক সময় চলে গেল। সকাল নটা-দশটার দিকে সদর ইস্পাহানীর টেলিফোন। কায়সার সাহেব তাকে অভয় দিলেন। বেলা তখন তিনটা বারান্দায় স্ত্রীর সাথে বসে আছেন তিনি। এমন সময় দেখলেন টুপি মাথায় একটি লোক এক দৃষ্টে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এ দেখে তাঁর স্ত্রী বললেন, “তুমি ভিতরে যাও, দেখনা লোকটা কিভাবে তাকিয়ে আছে।’ সন্ধ্যে ছ’টা। শহীদুল্লাহ কায়সার বসে বসে খবর শুনলেন। এক সময় চাকরকে ডেকে বললেন, আমার জন্য দু’টো রুটি বানিয়ো। শহীদুল্লাহ কায়সার প্রায়ই স্ত্রীকে বলতেন, দেখো, আমাকে যে কোন সময় নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং সব সময় আমার জন্য কিছু কাগজ-কলম আর সিগারেট রেখে দেবে। আর কিছু টাকা। শহীদুল্লাহ কায়সার আরো বলতেন, “আমি একজন সাংবাদিক। তারা আমাকে যাই করুক মারবার সাহস পাবে না।’ চাকরকে তিনি রুটি বানাবার কথা বলেছেন এমন সময় দরোজায় ধাক্কা। মিলিটারী এসেছে।