পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৫৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

524 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড শিরোনাম উৎস তারিখ ৬৩। যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পকে জনৈক ১১ নং সেক্টরের দলিলপত্র ২৯ নভেম্বর, ১৯৭১ মুক্তিযোদ্ধার চিঠি ধান/১/গ/(১) ধান/১/গ(২) ছালাম পর সমাচার এই গত ১৯শে নভেম্বর বৃহস্পতিবার দিন ভোর বেলায় ৭০ জনের একদল বদর বাহিনী আমরা যে গ্রাম দুইটিতে ছিলাম সেই গ্রাম ঘেরাও করিয়া বাড়ীঘর অগ্নিসংযোগ করিতে থাকে। ইহাতে আমরা নিরুপায় হইয়া ৯ জন একত্রিত হইয়া ফাইট দিতে বাধ্য হই । ফাইট-এ শত্রুপক্ষের একজন গুরুতর রূপে আহত হয়। এবং তাহারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই সুযোগে আমরা গ্রামান্তরে নিরাপদে আশ্রয় লইতে সমর্থ হই। দুঃখের বিষয় একটি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হইয়া গিয়াছে । তার পর দিনই অর্থাৎ ২০শে নভেম্বর কাগজপত্র গুলি লুকাইয়া ফেলে । তাহার কাছে মাত্র ৬০০ টাকা পায় । অনেক মারধোর করিয়াও কোনরূপ গোপন তথ্য না পাইয়া ১০০ টাকা রাখিয়া ছাড়িয়া দেয়। সিরাজ নামে আমাদের যে ছেলেটি সারেন্ডার করিয়াছে সে আমাদের নামধামসহ সমস্ত গোপন তথ্য প্রকাশ করিয়া দেয় । এবং আমাদের ধরাইয়া দিবার চেষ্টায় ছিল । অবশেষে সে বদর বাহিনী গ্রাম ঘেরাও করে এবং পুড়াইয়া দেয়। গ্রামটি পোড়ানোর ফলে অন্যান্য গ্রামে বিরাট আতঙ্কের সৃষ্টি হইয়াছে যাহার ফলে আমরা কাজ করিতে পাড়িতেছি না । থানা কমিটি গঠন করা আপাতত সম্ভব নয় । নালিতাবাড়ী বাজারস্থ ক্যাম্পে অপারেশন না হইলে আমাদের এখানে থাকাই সম্ভব নয়। তবে গ্রামবাসীদের মনোবল এখনও অটুট । অস্ত্র ব্যতীত তাহদেরকে বুঝাইয়া রাখা মোটেই সম্ভব নয়। জিনিসগুলির অতিসতুর ব্যাবস্থা করিবেন। তারপর করিয়রকে আমরা প্রথম তারিখে ১৫ টাকা, দ্বিতীয় তারিখ ৩০ টাকা এবং তৃতীয় ৩৫ টাকা দিয়াছিলাম । কিন্তু আপনারা কত দিয়াছেন তাহা জানান নাই । আমরা আর এভাবে কয়িয়রকে টাকা দিতে পারিব না । যাহা দিতে হয় আপনাদের ওখান হইতে দিবেন। আপনার কত টাকা তরিয়া দিবেন তাহা লিখিয়া জানাইবেন । আর বিশেষ কিছু লিখিলাম না । আগামীতে আপনাদের কুশল কামনা করিয়া এখানেই বিদায় নিলাম । ইতিআপনার ছোট ভাই বিঃ দ্রঃ- আমাদের থানা সম্বন্ধে আপনাদের জানার বাকী নাই । প্রতি গ্রামে দালালে ভরা । পিস্তল ছাড়া কাজ করা খুবই কঠিন হইয়া পড়িয়াছে। পিস্তল অবশ্যই পাঠাবেন।