পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

641 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড ঢাকায় বোমা বিস্ফোরণ অব্যাহত রয়টারের সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি জাতিসংঘ উদ্বাস্ত হাইকমিশনার প্রিন্স সদরুদ্দীন আগা খানের ঢাকা সফরের সময় ঢাকায় আটটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে গেরিলা যোদ্ধাদের গ্রেনেড আক্রমণে একজন আহত হয়। আরেকটি আক্রমণে ৩ জন খান সেনা নিহত হয়। স্বাধীন বাংলা বেতারের খবরে প্রকাশ, গত ২৩শে জুন ভোর চারটায় ঢাকা বিমান বন্দরে একটি বোমা বিস্ফোরণের পর বন্দর পাহারারত দখলদার দসু্য সৈন্যদের মধ্যে থমথমে ভাব বিরাজ করছে। আমাদের ঢাকা প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, ঢাকা বিমান বন্দরে বিদেশী সাংবাদিকদের নিয়ে একটি বিমান অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বিকট আওয়াজ করে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকায় অবস্থা যে মোটেও স্বাভাবিক নয়, ঢাকার মাটিতে পা দিতেই বিদেশী সাংবাদিকগণ তা প্রত্যক্ষ করলেন। হানাদারদের কড়া পাহারা সত্ত্বেও এ ধরনের বিস্ফোরণ হওয়ায় বর্বর পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা বিব্রত হয়ে পড়ছে। গত সপ্তাহে রাজশাহীতে পর পর তিনদিন সারা শহরে বোমা বিস্ফোরিত হলে খান সেনারা ভীতবিহবল হয়ে পড়ে এবং এখন তাদের বড় একটা ছাউনী থেকে বের হতে দেখা যাচ্ছে না। রাজশাহী শহর আক্রান্ত আমাদের স্বাধীনতাকামী তরুণরা রাজশাহী শহরে ঢুকে প্রবল আক্রমণ চালিয়েছেন। মুক্তিবাহিনীর কমান্ডোরা গত রোববার রাতে তিন দিক থেকে শহরটিতে প্রবেশ করেন। এসব আক্রমণে পাক সেনাবাহিনী বড় বেকায়দায় পড়েছে। মুক্তিবাহিনী মীরগঞ্জ, চারঘাট ও নবাবগঞ্জ-এই তিন দিক থেকে রাজশাহী শহরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এ আক্রমণকালে মুক্তিবাহিনী মর্টার, হাতবোমা ও হাল্কা মেশিনগান ব্যবহার করেন। এক খবরে প্রকাশ, মুক্তিবাহিনী ও পাক সেনাদের মধ্যে নোয়াখালী, সোনামুরি ও চট্টগ্রাম রণাঙ্গনেও প্রচন্ড ংঘর্ষ হয়। গেরিলা বাহিনী পাক-সেনাদের একটি জীপ মাইন দিয়ে উড়িয়ে দেয়। তাতে ৬ জন পাকসেনা নিহত হয। চট্টগ্রামে ও নোয়াখালীতে পাক টহলদার বাহিনীর ৬ জন সৈন্য গেরিলাদের হাতে নিহত হয়। শনিবারের সংঘর্ষে ৬০ জন সৈন্য নিশ্চিহ্ন মুক্তিবাহিনী গত ২৬শে জুন বিভিন্ন রণাঙ্গনে ব্যাপক আক্রমণ চালান। এর মধ্যে এর মধ্যে পূর্বাঞ্চল সেক্টরে কমপক্ষে ৬০ জন শত্রসৈন্য নিহত হয় এবং আমাদের মুক্তিবাহিনী কিছু অস্ত্রশস্ত্র দখল করে নিয়েছেন। গত ২২শে জুন কুষ্টিয়ার একটি গ্রামে মুক্তিবাহিনী গেরিলাদের আক্রমণে ১৬ জন পাক হানাদার খতম হয়েছে। গেরিলাদের সঙ্গে বৈদ্যনাতথলা ও কৃষ্ণনগরের কাছে দুটি আলাদা জায়গায় পাক-হানাদারদের ৬ ঘণ্টাব্যাপী গোলাবিনিময় হয়। উভয় পক্ষই মর্টার নিয়ে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ চালায়। খুলনা জেলার গনরাখালিতে পাক-সেনা ভর্তি ট্রাকের ওপর গেরিলা বাহিনী আক্রমণ করেন এবং এখানেও কিছু পাক-সৈন্য নিহত হয়। দালালরা খতম হচ্ছে বিভিন্ন শহর গ্রাম থেকে মুসলিম লীগ ও জামাত-ই-ইসলামের গুন্ডা ও হানাদার সৈন্যের পদলেহী দালালদের খতম করার কাজ ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিফৌজ পাটকেলঘাটা, টালা, পাইকগাছা, আশাশুনি, বদরতলা, কলারোয়া প্রভৃতি স্থানে ১৬ জন দালালকে গুলী করে হত্যা করেছেন। বাংলাদেশই আমার পরিবার – মেজর খালেদ