পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

643 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড পাক সৈন্যদের সঙ্গে সহযোগিতা গেরিলারা মুসলিম লীগ ও জামাত-ই-ইসলামী দলের সমর্থকদের বাড়ী-ঘর জুলিয়ে দিয়েছেন। পটনিতলার উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে। চিলমারী এলাকার একটি গ্রাম থেকে মুক্তিফৌজ মুসলিম লীগের তিনজন সদস্যকে ধরে নিয়ে গেছেন। মুক্তিফৌজ ২৬শে জুন তারিখে একটি পাটের গুদামে আগুন লাগিয়ে দেন। সৈন্যদের তিনজন সহযোগী নিহত হয়। ঠাকুরগাঁওর উত্তর-পশ্চিম এলাকায় পাক সেনাঘাঁটির ওপর মুক্তিফৌজ ২৮শে জুন আক্রমণ চালান। শ্রীহট্টে গেরিলা তৎপরতা জুড়ির কাছে একটি চা কারখানা গেরিলাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। সৈন্যদের ৪ জন সহযোগী নিহত হয়েছে। শ্রীহট্টের উত্তর-পূর্বে কোন এক এলাকায় মুক্তিফৌজ একটি সড়ক নষ্ট করে দেন। কুমিল্লায় পাক সৈন্যরা রেললাইনের কাছাকাছি গ্রাম থেকে লোকদের সরে যেতে বাধ্য করছে। গেরিলাদের অতর্কিত আক্রমণ এড়ানোর জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েকদিন পূর্বে কুমিল্লর কাছে একটি সামরিক প্রহরা-ঘাঁটি আক্রমণ করে মুক্তিফৌজ ৬ জন পাক সৈন্যকে খতম করেন। আখাউড়ার কাছে অতর্কিতভাবে পাক সেনাদের আক্রমণ করায় কয়েকজন পাক সৈন্য হতাহত হয়। হাজিগঞ্জের পুলিশ সার্কেলে কমান্ডোরা সামরিক-ঘাঁটি আক্রমণ করায় কয়েকজন হতাহত হয়। -যুগান্তর, ৩ জুলাই, ১৯৭১ 米 মুক্তিফৌজের দখলে বহু এলাকা ফিরে আসছে শিলং, ৩রা জুলাই-মুক্তিফৌজের বহু প্রতীক্ষিত বর্ষা এসে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে শুরু হয়েছে পাকবাহিনীর ওপর প্রচন্ড আক্রমণ। পাক-সৈন্যকে এখন আত্মরক্ষার পথ খুঁজতে হচ্ছে। বিভিন্ন রণাঙ্গনে এখন মুক্তিফৌজেরই আধিপত্য বিরাজ করছে। প্রতিদিনের যুদ্ধে এখন মুক্তিফৌজ সাফল্য অর্জন করছেন। ভারতীয় সীমান্ত থেকে ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার পাক-সৈন্যদের বিতাড়িত করায় বাংলাদেশের উত্তর প্রান্তের বহু এলাকা এখন মুক্তিফৌজের দখলে এসেছে। আওয়ামী লীগের জনৈক মুখপাত্র আজ বলেন যে, শ্রীহট্ট ও ময়মনসিংহ এলাকায় কমান্ডো আক্রমণে সম্প্রতি ৩০০ জন পাক-সৈন্য নিহত হয়েছে। প্রায় চারশত পাক সৈন্য গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীহট্ট অসামরিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঐ হাসপাতালটিকে এখন সামরিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলার টাঙ্গাইল এলাকার দক্ষিণে মুক্তিফৌজ ঢুকে পড়েছেন। চারটি থানার এলাকা এখন তাদের দখলে এসে গেছে। কয়েক দফা আক্রমণ চালিয়েও পাক সৈন্যরা সেখান থেকে মুক্তিফৌজকে হটাতে পারেনি। বিপরীত দিকে সকল সীমান্ত ঘাঁটি এখন মুক্তিফৌজের দখলে এসেছে।