পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

648 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড দসু্য সৈন্যরা মুক্তিফৌজ ও জনগণের নিকট হইতে বাধার সম্মুখীন হয় এবং বিভিন্ন জিলা ও বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চল দীর্ঘদিন পর্যন্ত মুক্ত ছিল। অবলম্বন করেন। ইহার ফলে সর্বত্র ইয়াহিয়ার ফৌজ নাজেহাল হইতেছে। দখলকারী সেনাবাহিনীর ২০/২৫ হাজার সৈন্য ও কয়েকশত অফিসার নিহত হইয়াছে। আহতের সংখ্যা আরও বেশী। সৈন্যদের মনোবল ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে এবং উহার যুদ্ধ অপেক্ষা লুটতরাজেই অধিক উৎসাহী হইয়া উঠিয়াছে। ইয়াহিয়ার সৈন্যবাহিনী সময়ে সময়ে গ্রামাঞ্চলে গিয়া নিরীহ গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার-উৎপীড়ন চালাইলেও উহারা সাধারণভাবে বড়বড় শহর বাজারের ঘাঁটিগুলিতেই আবদ্ধ। যতই দিন যাইতেছে, মুক্তিফৌজের সংখ্যা, ট্রেনিংয়ের সুযোগসুবিধা ও দক্ষতাও ততই বৃদ্ধি পাইতেছে এবং ইয়াহিয়া খানের ভাড়াটিয়া বাহিনী দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নাস্তানাবুদ হইতেছে। -মুক্তিযুদ্ধ, ১১ জুলাই, ১৯৭১ রণাঙ্গণ থেকে লিখছি বিশ্বাসঘাতক ইয়াহিয়ার দসু্য সেনাদের সাথে মুক্তিফৌজের যে সব যুদ্ধ হয় নিমেণ তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ চারান বিগত ২২ শে মে ৫০ জন বর্বর হানাদার সেনা কালিহাতী থানার বলমা গ্রামে নিরীহ জনসাধারণের ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দেয়। ফেরার পথে ১০ জন মুক্তিফৌজ গেরিলা কাযদায় তাদের চারান গ্রামে আক্রমণ চালায়। ৪০ মিঃ স্থায়ী যুদ্ধে ২৫ জন শত্রমসৈন্য নিহত এবং বহুসংখ্যক আহত হয়। শত্রম্নসেনার গুলিতে ২ জন গ্রামবাসী নিহত হয়। বিপুল ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে বর্বর সেনারা কালিহাতীর দিকে পালিয়ে যায়। বইলামপুর গত ৩রা জুন বইলামপুরে পাঞ্জাবীদের দালাল পুলিশ এবং মুক্তিবাহিনীর মধ্যে এক খ-যুদ্ধ হয়। মুক্তিবাহিনী বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে ৭ জন দালাল পুলিশ গ্রেফতার করেন। বল্লা ১২ই জুন বলস্নাগ্রামে বর্বর তাতার বাহিনীর উপর মুক্তিবাহিনী প্রচ- আঘাত হানেন এবং কমপক্ষে ৫৮ জন শত্রু খতম করেন। সুদীর্ঘ ৫ ঘণ্টা যুদ্ধের পর পাকসেনারা পিছু হটে। মুক্তিফৌজ ৪টি শত্রপলাশসহ বহু অস্ত্রশস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করেন। কামুটিয়া গত ১৬ই জুন সকাল ১০টা ১৫মিঃ বাশাইল থানার কামুটিয়া গ্রামে মুক্তিবাহিনী এবং তথাকথিত পাকিস্তানী সেনার সাথে একতুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে ১৯ জন পাকসেনা নিহত ও ৬০ জন আহত হয়। বিগত ১৮ জুন মুক্তিবাহিনী এবং হানাদার সৈন্যদের মধ্যে পুনরায় যুদ্ধ বাধে। এই যুদ্ধে ১৪ জন হানাদার সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনী ২টি চীনাগান, একটি মেশিনগান ও ১টি এল এম জি সহ বহু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেন।