পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড (নিজস্ব সংবাদদাতা) রায়গঞ্জ, ২৯ জুলাই- দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও, পাঁচগড়, বোদা, তেতুলিয়া এবং দেবীগঞ্জ এখন বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সম্পূর্ণ দখলে। দখলীকৃত এই সব অঞ্চলে এবং সরকারী ও বেসরকারী ভবনগুলিতে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের পতাকা উড়ছে বলে মুক্তিবাহিনীর ঘনিষ্ঠ মহলের খবরে জানা যায়। যুগান্তর, ২৯ জুলাই, ১৯৭১ শক্রসেনারা ত্ৰাহি ত্ৰাহি ডাকছে বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে বঙ্গশার্দুল মুক্তিযোদ্ধারা রণহুঙ্কারে শত্রবাহিনীর মধ্যে ত্ৰাহি ত্ৰাহি ডাক এবং রণাঙ্গন ছেড়ে পালাবার হিড়িক শুরু হয়েছে। বড় বড় মেজরকে পিছনে খুঁটি হিসেবে খাড়া করেও ভীত পাক সেনাদের যুদ্ধের ময়দানে ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। তারা মেজরকে মেরে অগত্যা পথ পরিস্কার করে উর্ধ্বশ্বাসে পিছু হটে যাচ্ছে। প্রতিদিন মুক্তিযোদ্ধাদের বেদম মারে শত শত শত্রসেনার বিদার দেহটা ঢলে পড়ার দৃশ্য চোখে ভেসে উঠলে শরীর তাদের ঠান্ডা হয়ে যায়, পা তাদের সামনে বাড়তে চায় না। বাড়ির মা বাবা আত্মীয় স্বজন, ছেলেমেয় ও প্রিয়জনের কথা মনে পড়ে গেলে এমনিতেই শরীর অবশ হয়ে আসে, হাত থেকে মারণাস্ত্র পড়ে যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গন থেকে প্রতিদিন পাক দস্যদের পলায়নী মনোবৃত্তির এ ধরনের অনেক খবর এখানে পাওয়া যাবেই। বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী সদর দফতরের তথ্য বিভাগের বুলেটিনে প্রকাশ, হানাদার পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের বেপরোয়া প্রচন্ড আক্রমণের মুখে নাজেহাল হয়ে পড়েছে। বাংলার দখলীকৃত এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ আরও জোরদার হয়েউঠেছে। তাদের শত শত পাক সেনা, রাজাকার এবং তাদের সহযোগী দেশীয় দলালরা হতাহত হচ্ছে। শত্রদের চলাচল ও সরবরাহ ব্যবস্থা আচল করার জন্য রেল লাইন, রেল সেতু ও সড়ক সেতু উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। দিনাজপুর, রংপুর,রাজশাহী সেক্টর থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা যায় যে, মুক্তিযোদ্ধারা ভুরুঙ্গামারী এলাকায় একটি পাক সেনাদলকে ঘিরে ফেলেন। এখানে পাক সেনাদের একটি জিপ ধ্বংস করা হয়। অপর একটি অতর্কিত হামলায় ১১ জন পাক সেনা খতম এবং ৭ জন আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা রইস বাগ এলাকায় লালমনিরহাট ও ককীনার মাঝামাঝি স্থানে রেল লাইন উড়িয়ে দেন। পাক বাহিনী একটি ট্রেন এখানে লাইনচু্যত হলে ট্রেনের ২টি বগি উড়ে যায়। গত ১৭ই জুলাই রাজশাহী জেলার শাহপাড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমণে ২২ জন পাক সেনা খতম হয়। প্রকাশ, এই দিন ৩০ জন পাক সেনা তাদের মহাদেবপুর শিবির থেকে ট্রাকে করে শাহপাড়ে টহল দিতে আসে। এদের সাথে রাজাকারও ছিল। খবর পেয়ে সতর্ক মুক্তিযোদ্ধারা তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯শে জুলাই রোহনপুর এলাকায় ৩০ জন পাক সেনার একটি টহল পার্টির উপর হামলা করে মুক্তিযোদ্ধারা ১ জন ক্যাপটেনসহ ৯ জনকে খতম করেন। দিনাজপুর রাণীনগরে পাক সেনাদের শিবিরে আকস্মিক হামলা করে ১০ জন খান সেনাকে খতম এবং মাঝারী ধরনের মেশিন গান এবং গোলাবারুদ দখল করেন। ২০ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা বগুড়া শহরে সার্কিট