পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

671 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড আবাসিক আহত হয়। বিস্ফোরণের ফলে হোটেলের লবির অংশবিশেষ উড়ে যায়। এর পর থেকে দখলদার সেনারা শহরের জনশূন্য পথে টহল দিতে থাকে। এই কান্ড হয়। মুক্তিফৌজ যে পাক সেনাদের ওপর আক্রমণের মান বৃদ্ধি করেছে এই বোমা বিস্ফোরণ তার একটি নিদর্শন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার শুরু হওয়ার সঙ্গে এই বোমা বিস্ফোরণের সংযোগ আছে। আগামী শনিবার পাকিস্তানের ২৪ তম বার্ষিক স্বাধীনতা অনুষ্ঠানকে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদে মুখর করে তোলার জন্য ঢাকার বাঙ্গালী অধিবাসীদের উদ্দেশ্যে প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছে। ঐ দিন প্রতিরোধ আরও তীব্রতর করে তোলার কথাও প্রচারপত্রে বলা হয়েছে। সীমন্তে পাক তৎপরতা বৃদ্ধি পিটিআই নয়াদিল্লী থেকে জানাচ্ছেন যে, মুক্তিবাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধির সঙ্গে পাক জঙ্গী শাহীও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর সেনাসজ্জার তৎপরতা বাড়িয়ে তুলেছে। উদ্দেশ্য ভারতের বিরুদ্ধে রণোন্মাদনা বাড়িয়ে তোলা। পাক জঙ্গীবাহিনী এখন সীমান্তের ষাটটি চৌকিতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করেছে। কিন্তু সেনা কমান্ডের নির্দেশ সত্ত্বেও ভারত বাংলাদেশ নদী, জলপথ, পাহাড়, চারণভূমি প্রভৃতির ভেতর দিয়ে বিস্তৃত ২৭০ টি সীমান্ত ফাঁড়ির ওপর সফল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এখনো সফল হয়নি। এই সীমান্ত ফাঁড়িগুলো ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, আসাম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরা বরাবর। অন্যদিকে মুক্তিবহিনী সমগ্র সীমান্ত বরাবর বাংলাদেশের পঞ্চাশ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত নিজ নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং নানা অঞ্চলে অনেকখানি অভ্যন্তরেও ঢুকে পাড়েছে। -যুগান্তর.১৩ আগষ্ট, ১৯৭১ 来 来 মুক্তিবাহিনীর তৎপরতা গত ২৫শে জুলাই রাত্রে ঢাকার উপকণ্ঠে ডায়না সিনেমার কাছে মুক্তিফৌজ দুইটি ট্রাক ভর্তি পাক সেনাকে হাতবোমা দ্বারা আক্রমণ করিয়া ২৫/৩০ জনকে নিহত ও ট্রাক দুইটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ইহার পরের দিন কয়েকশত সৈন্য আসিয়া প্রতিহিংসা চারিতার্থ করার উদ্দেশ্যে প্রায় পাঁচশত নিরীহ নাগরিককে হত্যা করে এবং দুই পাশ্বের গ্রামগুলিকে ভস্মীভূত করিতেছেন। এই রূপ অত্যাচার সত্ত্বেও জনগণ গেরিলা যোদ্ধাদিগকে আশ্রয় ও সহযোগিতা দান করিতেছেন। ২৯ শে জুলাই মুক্তিবাহিনী সন্ধ্যা সাতটা হইতে কার্ফ জারির ঘোষণা সম্বলিত প্রচারপত্র বিলি করে। ফলে ছয়টা বাজিতে না বাজিতেই রাস্তাঘাট জনশূন্য হইয়া পড়ে ও দোকানপাট বন্ধ হইয়া যায়। পুলিশ বহু চেষ্টা করিয়াও দোকানপাট খোলাইতে পারে নাই। বিরাট এলাকা শত্রকবলমুক্ত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে মুক্তিবাহিনী একের পর এক শত্রুঘাঁটি দখল করিয়া দুর্বার গতিতে আগাইয়া চলিয়াছে। গত কয়েকদিনে মুক্তিবাহিনী কাকিনা, হাতিবান্ধা, ভুরুঙ্গামারী, দহগ্রাম, বরখাতা, বাওরা, পাটগ্রাম