বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড
১৮,১৯,২০ শে আগষ্ট, এই এলাকার মুক্তিবাহিনী বসন্তপুর, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর, মেীতলা,ঈশ্বরপুর ও পাইকগাছা মুক্ত করেছেন। পাইকগাছায় একটি লঞ্চ আক্রমণ করে ২৬ জন পাক সেনাকে হত্যা করেন।
১৬ই আগষ্ট, শত প্রচারিত পাক মার্কিন হৃদয়সম পদ্মাজাহাজকে মুক্তিবাহিনী চালনা বন্দরে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। ঐ একই দিন চট্টগ্রাম, চালনা, ঢাকা, মঙ্গলা বন্দর- পদ্মা, মেঘনা নদীতে জাহাজ, ষ্টিমার, গানবোট, সামরিক লঞ্চ সব-মিলিয়ে মোট ৩৬ জলযান ডুবিয়ে দেয়।
২৪ শে আগষ্ট, মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা জেলার মঙ্গলা বন্দরে গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে ৬টি জাহাজ ডুবিয়েছে ও ২টি আটক করেছে। ৬টির মধ্যে ২টি মার্কিন ২টি চীনা, ১টি জাপানীও ১টি পাকিস্তানী।
রংপুর এলাকা
১৭ই আগষ্ট, তারাপুর ঘাটে ৩৫ পাক সেনা নিহত হয়েছে। রংপুর জেলার জেলা থানা মুক্তিবাহিনীর দখলে।
বগুরা এলাকা
মুক্তিবহিনীর মাইন বিস্ফোনণে সৈন্য বোঝাই দুটি পাক ট্রাক ধ্বংস হয়। তারা একটি পাক গানবোট ও কয়েকটি মোটর লঞ্চ নষ্ট করে। হাতিবান্ধার দক্ষিণ-পশ্চিমে মুক্তিবাহিনী একটি সেতু ধ্বংস করে।
রাজশাহী এলাকা
আগষ্ট, মুক্তিবাহিনী কালীগঞ্জের একটি রাজাকার শিবির আক্রমণ করে তিনজনকে খতম করে।
যশোহর এলাকা
১৮ই আগষ্ট থেকে তিনদিনের মধ্যে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৪৯ জন রাজাকার খতম হয়েছে। যশোহর-চুয়াডাঙ্গা ও যশোহর-বেনাপোল রোডে কালভার্ট সেতু এবং পাকসেনা শিবির ধ্বংস করেছে।
মুন্সিগঞ্জে মহকুমার একাংশ মুক্ত
(নিজস্ব সংবাদদাতা)
ঢাকা জেলার মুন্সিগঞ্জ সাবডিভিশনের বিভিন্ন থানাতে গত জুন মাসের প্রথম দিকে ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনী প্রবেশ করে এবং নবাবগঞ্জ ও দোহার থানাতেই অন্ততঃপক্ষে আড়াই শত লোককে হত্যা করে এবং নির্বিচারে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে ও নারী নির্যাতন চালায়।
সিরাজদিখান, কেরানীগঞ্জ, জিঞ্জিরা, গজারিয়া, শুভাড্যা কালিগঞ্জ, লৌহজং প্রভৃতি থানাতে ব্যাপক গণ-হত্যা, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন চালায়।
জুলাই মাসের শেষের দিকে এই অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর প্রথম তৎপরতা শুরু হয়। মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধারা দোহার থানার ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, থানা এবং দুইটি ওয়্যারলেস স্টেশনের উপর আক্রমণ চালাইয়া এইগুলি ধ্বংস করিয়া দেয়।
আগষ্ট মাসের দিকে মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধারা শ্রীনগর থানায় ব্যাঙ্ক, থানা এবং পোষ্ট অফিসের উপর আক্রমণ চালায়।