বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড
সাবাস!
(বিশেষ প্রতিনিধি)
বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আজ মুক্তিযোদ্ধা। পথে ঘাটে হোটেলে-রেস্তোরাঁয় সর্বত্র ছড়াইয়া আছেন শেখ মুজিবের বিল্পবী সেনারা। যখনই তাদের সামনে দস্য সৈন্য খতম করার দুর্লভ সুযোগ আসিয়া উপস্থিত হয়। তখনই নির্মম নিয়তির মত মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপাইয়া পড়েন দুশমনের উপর।
বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকার রাজধানী ঢাকা হইতে প্রাপ্ত এক খবরে প্রকাশ, সম্প্রতি হানাদার বাহিনীর দুইজন কর্নেল ও একজন মেজর ঢাকার হোটেল ইণ্টারকণ্টিনেণ্টালের ৯১০ নং কক্ষে অতিরিক্ত মদ্যপান করিয়া বেহুশ হইযা পড়িয়া থাকে। সেই সুযোগে মুজিবের অনুসারী জনৈক হোটেল বেয়ারা উক্ত কক্ষে ঢুকিয়া ষ্টেনগানের সাহায্যে গুলী করিয়া বর্বর খান সেনাদের উক্ত তিনজন অফিসারকেই খতম করিয়া তাহাদের মদ্যপানের তৃষ্ণা চিরতরে মিটাইয়া দেন।
ময়মনসিংহে পাক বিমান থেকে নাপাম বোমাবর্ষণ
শিলং ১৪ই অক্টোবর (ইউএনআই)- গত একমাস ধরে ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল এলাকায় পাক বিমান বাহিনী নিরীহ বেসামরিক জনতার উপর নাপাম বোমাবর্ষণ করছে। মুক্তিফৌজের গেরিলা বাহিনীর তৎপরতায় বেসামাল হয়ে পাক বাহিনী এই কাণ্ড করছে।
করিমগঞ্জ থেকে পিটিআই জানাচ্ছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যায় এই ভয়ে পাক সামরিক কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানের অস্তিত্ব সংক্রান্ত কথাবার্তা বন্ধ করার জন্য ফৌজি বিধির ৮০ ধারা আবার নতুন করে চালু করেছেন।
রণাঙ্গণেঃ দখলীকৃত অঞ্চলের সর্বত্র গেরিলা আক্রমণের প্রচণ্ডতা বৃদ্ধি
গত ৮ই সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম আদালত ভবনের দোতলার ওপর মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধাদের একটি টাইম বোমা বিস্ফোরণ ঘটলে দুই ব্যক্তি নিহত ও ১৭ জন গুরুতর রূপে আহত হয়। এদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা মরণাপন্ন।
একটি বিদেশী সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছেন যে, গেরিলা যোদ্ধারা উক্ত টাইম বোমা একটি ছাতার ভেতর লুকিয়ে রাখেন।
এদিকে প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, বাংলাদেশের গেরিলা বাহিনী গত দুসপ্তাহে যশোর জেলার শ্রীপুর থানার বিস্তীর্ণ এলাকা শক্রকবল মুক্ত করেছেন।
ফরিদপুর থানা আক্রমণ
গত ৫ই সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলার নারীয়া থানার ওপর আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা একজন পাকিস্তানী পুলিশ অফিসারসহ ৩ জন পুলিশ এবং ১৬ জন রাজাকারকে হত্যা করেন।