পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



711

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: একাদশ খণ্ড

 খঞ্জলপুর ও শিবরামপুরে গেরিলারা পাক সেনাদের উপর ঝটিকা আক্রমন করে আরও ২১ জন সেনাকে খতম করেন।

 রংপুর; এই জেলার পশ্চিম ভুরুঙ্গামারীতে পাক সেনারা যখন পরিখা খনন করছিল তখন মুক্তিবাহিনী তাদের উপর ঝটিকা আক্রমন করে। এবং এই সময় তাদের ২টি গাড়িও বিধ্বস্ত করে।

 দিনাজপুর: এ মাসের প্রথম সপ্তাহে মোগলহাটিতে মুক্তিবাহিনী ও পাক সেনাদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়; ফলে ৭ জন পাক সেনা হতাহত হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের ৭ জন সামান্য আঘাত পায়।

 চট্টগ্রাম: ৬ই অক্টোবর ঢাকা-চট্টগ্রাম এর মধ্যবর্তী পথে যখন পাক বাহিনীর সৈন্যরা একটি গাড়িতে মাল বোঝাই করছিল, তখন মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা তাদের উপর হ্যাণ্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ফলে ৩ জন পাক সেনার মৃত্যু ঘটে।

 সিলেট: গত ৭ই অক্টোবর রাত্রে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা কামদেবপুরে পাক সেনাদের চারিদিক হতে অবরোধ করে ফেলে এবং তাদের ১ জন মেজরসহ ২৫ জন পাক সেনাকে খতম করে।

 চম্পকনগরে মুক্তিবাহিনী পাক সেনাদের বিব্রত করে তোলে এবং ৩ জনকে খতম করে।

 করই বাজার পাক ঘাঁটির উপর মুক্তিবাহিনী আক্রমন চালিয়ে ৫ জনকে খতম করে।

 টাঙ্গাইল: গত ৮ই অক্টোবর কাগমারী অঞ্চলে মুক্তিবহিনী পাক সেনাদের উপর সজোরে আক্রমণ চালিয়ে ৫ জন সেনাকে খতম করে এবং টাঙ্গাইল এর এক বিস্তীর্ণ এলাকায় পাক হানাদার ও মুক্তি বাহিনীর গেরিলাদের সঙ্গে প্রচণ্ড লড়াই চলছে। 

-সাপ্তাহিক বাংলাদেশ, ১৫ অক্টোবর, ১৯৭১
* * * * *

গেরিলাদের অব্যর্থ গুলিতে মোনেম খাঁ খতম

(নিজস্ব সংবাদ দাতা পরিবেশক)

 জল্লাদ ইয়াহিয়ার পূর্বসূরি আইয়ুবের কুখ্যাত সহচর মোনায়েম খাঁ মুক্তিযোদ্ধাদের অব্যর্থ গুলিতে খতম হইয়াছে।

 গত ১৩ ই অক্টোবর মোনায়েম খাঁ ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হইলে সেখানেই তাহার মৃত্যু ঘটে।

 মোনায়েম খাঁ ১৯৬৪ সাল হইতে ১৯৬৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসাবে আয়ুবের সকল দুস্কর্মের সাথী ছিল। ফলে সে বাঙালিদের তীব্র ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়। গভর্ণরের পদ হইতে অপসারিত হওয়ার পরও মোনায়েম খাঁর পক্ষে প্রকাশ্যে চলাফেরা কিম্বা জনসমাজে মেলামেশা করা সম্ভব ছিল না। ইয়াহিয়া খাঁর আমলে সে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে।

 ২৫শে মার্চের পর সে জল্লাদ ইয়াহিয়া চক্রের দালালিতে আত্মনিয়োগ করিয়াছিল। কিন্তু বাংলাদেশের বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীরা তাহার মীরজাফরীর উচিত সাজা দিয়াছে। 

-মুক্তিযুদ্ধ, ১৭ অক্টোবর, ১৯৭১
* * * * *