পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



715

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

 যথাক্রমে ২-৮-৭১, ৬-৮-৭১ এবং ১১-৮-৭১ তারিখে ঢাকার জিন্না এভিনিউ, নিউ মার্কেট বাস ষ্ট্যাণ্ড এবং হোটেল ইণ্টারকণ্টিনেণ্টাল মুক্তিবাহিনীর হাতবোমা ও গ্রেনেড আক্রমণে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

-বিপ্লবী বাংলাদেশ, ১৭ অক্টোবর, ১৯৭১
* * * * *

খুলনা সেক্টরে ৫০০ খান সেনা নিহত

 মুক্তিফৌজের হিসাবে দেখা গেছে যে, গত দুমাসে মুক্তিফৌজের হাতে খুলনা সেক্টরে বিভিন্ন স্থানের লড়াইয়ে ৫০০ খান সেনা ও ২০০ রাজাকার নিহত হয়েছে। তাছাড়া ৬০০টি পাক রাইফেল দখল করা হয়েছে এবং ৬০ জন রাজাকার মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

 কুমিল্লা জেলার কসবা এলাকায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এক তুমুল সংঘর্ষে ৩৫ জন পাক সৈন্য নিহত এবং প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছে।

 সংবাদে প্রকাশ, মর্টার ও মেশিনগানে সজ্জিত বাংলাদেশ গেরিলাদের অতর্কিত আক্রমণে বহু পাক সৈন্য হতাহত হয়েছে। মুক্তবাহিনী পাঁচটি বেয়নেট ও ২৫০ রাউণ্ড চীনা বুলেট দখল করে নিয়েছে। মুক্তিবাহিনীর একজন কমাণ্ডো আহত হয়েছে বলে ঐ সংবাদে বলা হয়েছে।

 অন্য এক সংবাদে জানা গেছে, গত ২৮ শে সেপ্টেম্বর মুক্তিফৌজ মর্টার ও হাতবোমা নিয়ে আধারমানিক এলাকায় পাক ঘাঁটিতে আঘাত হানে। ময়মনসিংহ অঞ্চলে মুক্তিফৌজ বাহাদুরাবাদে পাক সৈন্যদের একটি লঞ্চ ধ্বংস করায় ২০ জন সৈন্য হতাহত হয়েছে।

মুক্তিফৌজে যোগদান

 খুলনা সেক্টরের মুক্তিফৌজ সুত্রে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে যে, বাংলাদেশে দলেদলে লোক মুক্তিবাহিনীতে যোগদান করার জন্য এগিয়ে আসছেন। তাছাড়ার অনেক অসামরিক ব্যক্তি মুক্তিফৌজকে নানাভাবে সাহায্য করছেন। বরিশালের ওয়াজিরপুরে বাংলাদেশের জনৈক নাগরিক মুক্তিফৌজকে একলক্ষ টাকা নগদ দিতে চাইলে মুক্তিফৌজ তা গ্রহণ না করে ঐ টাকার পরিবর্তে খাদ্য সামগ্রী দেবার জন্য অনুরোধ করেন।

 মুক্তিফৌজে যোগদানেচ্ছু ব্যাক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই ছাত্র ও প্রাক্তন সৈন্য বিভিাগের লোক।

৮টি মালবাহী জাহাজ নিমজ্জিত

চট্টগ্রাম ও মঙ্গলা বন্দরে সম্প্রতি যে আটটি মালবাহী জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত সংবাদ জানা গেছে। নিমজ্জিত ৮টি জাহাজের মধ্যে ৬টি বিদেশী এবং ২টি পাকিস্তানী জাহাজ ছিল।

 মুক্তিবাহিনীর জনৈক মুখপাত্র বলেন যে, মংলা বন্দরে মুক্তিবাহিনীর তৎপরতায় সমুদ্রগামী ২টি মার্কিন, ২টি চীনা, ১টি পাকিস্তানী ও একটি জাপানী জাহাজ নিমজ্জিত হয়েছে।

১০ কোটি টাকার পাক জাহাজ নষ্ট

 চট্টগ্রাম বন্দরে মুক্তিবাহিনীর তৎপরতায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৫ হাজার টন ওজনের পাকিস্তানী জাহাজ আল আববাস জলে ডুবে গেছে। পাকিস্তানের তদানিন্তন প্রেসিডেণ্ট ফিল্ড মার্শাল আয়ুব খাঁ ১৯৬৮ সালে এই জাহাজটির যাত্রার উদ্ভোধন করেছিলেন।