পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
752



বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

হানাদার বাহিনী একেই সংঘর্ষে ভারী ‘মেশিনগান’ ’৮১ এম এম মর্টারের গোলা এবং ২৫ পাউণ্ড ওজনের কামানের গোলা ব্যবহার করে। কিন্তু কোন মতেই মুক্তিবাহিনীর সাথে লড়াইয়ে দাঁড়াতে পারছে না। এখন পর্যন্ত ১২৫ জন পাক সেনা ও ২৫০ জন রাজাকার মুক্তিবাহিনীর হাতে খতম এবং ১৫টি বাংকার সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। মুক্তিফৌজের নায়েক- কাসেম, মোহর আলী এই যুদ্ধে অভূতপূর্ব পারদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। মুক্তিবাহিনী এখানে ১৪ জন রাজাকার ও দুজন পাক সেনাকে আটক করেছেন এবং ২০টি রাইফেল ও অনেক গোলাগুলি দখল করেছেন। রাজশাহী ১০০ বর্গমাইল এখন মুক্তিবাহিনীর পূর্ণ দখলে এবং সেখানে স্বাধীন বাংলার প্রশাসন ব্যবস্থা চলছে। মারমূখী লড়াই এখনো চলছে। নবাবগঞ্জ শহরটি তিন দিক দিয়ে অবরুদ্ধ। পতন প্রায় আসন্ন।

 হিলিতে প্রচণ্ড যুদ্ধ: পাক ট্যাংক ধ্বংস: হিলি রক্ষার মরণপণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েও পাক বাহিনীকে আরও ট্যাঙ্ক হারাতে হয়েছে বলে আজ এক বিশ্বস্ত সূত্রের খবরে জানা গেছে। হিলি পাক সেনাদের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। হিলির পতন হলে রংপুর ক্যাণ্টনমেণ্ট থেকে উত্তর বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে তাই পাক সেনারা এখানে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

 মুক্তি সেনারা হিলিকে তিন দিক থেকে আক্রমণ করেছে। এতে বেসামাল পাক সেনারা ভারতের বালুরঘাটের দিকে অগ্রসর হলে ভারতীয় বীর সেনারা পাল্টা আক্রমণ করে। কয়েকখানা ট্যাঙ্ক এবং ৮০ জন পাকসেনা খতম হয়েছে।

 জানা গেছে হিলিতে ৮ হাজার সৈন্য ট্যাঙ্ক ও দূরপাল্লার ভারী কামান নিয়েও মুক্তিবাহিনীর অগ্রসরকে প্রতিহত করতে পারছে না।

-বিল্পবী বাংলাদেশ, ২৮ নভেম্বর, ১৯৭১

米           米           米           米           米

রণাঙ্গন থেকে লিখছি

 দেশমাতৃকার অতন্দ্র প্রহরী বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ বাংলাদেশের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ স্থান শত্রমুক্ত করে বাংলাদেশের পতাকা বিজয়ের স্তম্ভ হিসাবে ইস্পাতদৃঢ় মনোবল নিয়ে উড্ডীন করেছেন। শ্রীপুর, কাপাসিয়া, শিবপুর, রায়পুরা ও মনোহরদী থানাসহ কিশোরগঞ্জ মহকুমা সম্পূর্ণ শত্রমুক্ত করেছেন। অত্র এলাকার বহু রাজাকার ও বাঙ্গালী সৈন্য প্রচুর গোলাবারুদসহ মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করেছে। কালিগঞ্জ ও জয়দেবপুর থানার শিল্প এলাকাসহ বিস্তীর্ণাঞ্চলই মুক্ত। উক্ত এলাকার শত্রু ঘাঁটিতে আজ দুদিন যাবৎ মুক্তিবাহিনীর সাথে তুমুল সংঘর্ষ চলছে।

--মুক্ত বাংলা, ২৯ নভেম্বর, ১৯৭১

米           米            米           米           米

পাক সেনাদের হিলি থেকে পলায়নঃ মুক্তিবাহিনীর দখলে জয়পুরহাট

 হিলি সীমান্ত, ২৮ নভেম্বর- আজ ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী পাকিস্তানী গোলন্দাজ বাহিনীকে বাংলাদেশের হিলি থেকে পিছু হটিয়ে দেন। ওদিকে মুক্তিবাহিনী তুমুল লড়াই-এর পর হিলির দশ মাইল ভিতরে জয়পুরহাট শহরটিও মুক্ত করে দিয়েছেন। মুক্তিবাহিনীর হাতে সেখানে চারটি পাক ট্যাংক ঘায়েল হয়েছে।  রাত্রে এই সীমান্তে আরও সংবাদঃ এই জয়পুরহাটে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় চিনির কলটি এখন মুক্তিবাহিনীর দখলে। জয়পুরহাট দখলের আগে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর লড়াইয়ে পাকিস্তানের প্রায়