পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৮৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

800 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৩১৯ রাজনৈতিক সামাধানের জন্য বাংলাদেশ কালান্তর ৬ জুন, ১৯৭১ রাজনৈতিক সামাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধানের চাদফা পূর্বশর্ত |ষ্টাফ রিপোর্টার। কলকাতা, ৬ জুন- আজ স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্র প্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম চার দফা নূন্যতম পূর্বশর্ত উপস্থাপিত করে জানিয়েছেন, ইয়াহিয়া সরকার ঐ শর্তাবলী মেনে নিলেই বাংলাদেশ সমস্যার রাজনৈতিক সামাধান সম্ভব। এই শর্তগুলি হলঃ (১) বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং কারান্তরালে নির্বাসিত অপরাপর গণপ্রতিনিধিদের বিনাশর্তে মুক্তিদান; (২) অবিলম্বে পাক হানাদার বাহিনীর বাংলাদেশ ত্যাগ; (৩) বাংলাদেশের স্বাধীন, গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের স্বীকৃতি; (৪) বাংলাদেশে সামরিক তাণ্ডবের ফলে লুষ্ঠিত সম্পদ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক নিরুপণ করে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দান। আজ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র কর্তৃক প্রচারিত সৈয়দ নজরুল ইসলামের দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এক বেতার ভাষণে ঐ শর্তগুলি তুলে ধরা হয়েছে। পুনর্জীবনের কথা মনে করেন তাহলে তিনি মূর্থের স্বর্গে বাস করেন। “লাখো শহীদের রক্তে ঐক্যবদ্ধ পাকিস্থান মরে গেছে, তাকে আর বাঁচানো যাবে না। সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালী কোন গোঁজামিলের সমস্যা সমাধান মেনে নেবে না।” সাম্প্রদায়িকতা আর মাথাচাড়া দিয়ে শঠতে পারবে না তিনি বাংলাদেশের জনগনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “যে অস্ত্রকে সম্বল করে পশ্চিমা শাসকরা আপনাদের ২৩ বছর ধরে শোষণ করেছে, সেই সাম্প্রদায়িকতার অস্ত্র তারা আবার শাণাচ্ছে। তিনি দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, “বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।” তিনি জানান, ২৩ বছর ধরে আমরা বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলমান-ধৃষ্টান, বৌদ্ধ একসঙ্গে শোষিত হয়েছি আবার এখন একসঙ্গে লড়াই করছি। ‘জঙ্গশাহী মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ধ্বংস করেছে, খুন করেছে ডঃ গোবিন্দ চন্দ্র দেবকে, ডাঃ ফজলুর রহামনকে, ক্যাথলিক ফাদার তিনজনকে, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের।: ‘একশ্রেণীর ভাড়াটিয়া দালাল’ বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে তার উল্লেখ করে তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, “কোন দৃস্কৃতকারী যদি মানুষে মানুষে বিভেদ ও শান্তিপ্রিয় জনগণের প্রাণ বিপন্ন করে তাহলে তখনই খবর দেবেন- আমাদের মুক্তিবাহিনীর ছেলেরা যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন, ঐ সকল দুষ্কৃতকারীদের দেখামাত্র কঠোর সাজা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”