পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

951 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৩৯৯। পাক-ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধের আনন্দবাজার পত্রিকা ১০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ খবর সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত মুক্তির নিশান উড়ছে চুয়াডাঙ্গায়। উড়ছে চাঁদপুরে। এদিকে ঝিনাইদহ থেকে এড়িয়ে একটি ভারতীয় বাহিনী কুষ্টিয়ার উপকণ্ঠেও পৌছে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্ৰী জগজীবন রাম বলেন, রংপুর আর দিনাজপুরের পতন আসন্ন। এই অঞ্চলে ভারতীয় বাহিনী নতুন করে ঝড় হয়ে নতুন উদ্যমে রংপুরের দিকে এগিয়ে চলেছে। আর দিনাজপুর শহরের দশ মাইল ভিতরে কাউঠানগর সেতুর ওপর তীব্র লড়াই চলছে। কুমিল্লার সন্নিহিত ময়নামতি এখন খান সেনার হাতে। তবে তাদের পালাবার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ময়নামতি ছাউনির আশপাশের পাহাড়ে আর শত্রুসৈন্য নেই। ঢাকার ২২ মাইল উত্তর-পূর্বে আশুগঞ্জ ফেরীঘাট মিত্রসেনার দখলে। যশোহর এলাকায় ভারতীয় সেনা এক হাজার টন গোলাগুলি ফোকটে পেয়ে যায়। পালানোর তাড়ায়, দখলদারের এসব ফেলে গিয়েছে। যশোহরের দক্ষিণে রূপদিয়ায় একজন মেজর এবং ৪০ জন সৈন্য নিহত। ভারতীয় বাহিনী ক্রমে ক্রমে খুলনার দিকে এগোচ্ছে। ময়মনসিংহ অঞ্চলে মিত্র সেনা জামালপুর সম্পূর্ণভাবে ঘিরে ফেলেছে। যে কোন মুহুর্তে এর পতন হতে পারে। প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক প্রেসনোটে বলা হয় : কোন শত্র যাতে জল পথে পালাতে না পারে সেজন্য নৌবাহিনীর বঙ্গোপসাগরে নজর রেখেছে। ভারতীয় বাহিনী এখন মেঘনার তীরে, চাঁদপুরের পূর্বদিকে। সেখানে থেকে নদীর উপর নজর রেখে চলেছে। প্রায় ৫০০ পাক সেনাসহ একটি বড় জাহাজকে প্রথমে ট্যাংক থেকে তারপর বিমান থেকে বোমা ফেলে আক্রমণ করা হয়। জাহাজটিতে আগুন জুলতে দেখা যায়। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে শত্রুসৈন্য নিশ্চিহ্ন করার জন্য রাত্রে আমাদের জওয়ানেরা বিমান পথে আঘাত হানছে। পাক বাহিনী নদী পথে পলায়নের জন্য বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামের আশেপাশের নদী হয়ে সমুদ্র পথে বঙ্গোপসাগরের দিকে ছুটছে। ভারতীয় বাহিনী এদিন সন্ধ্যার মধ্যে অন্তত সৈন্য বোঝাই তিনটি জাহাজ আটক করে। একটি জাহাজের সৈন্যরা সাদা পতাকা উড়িয়ে ভারতীয় জওয়ানদের কাছে আত্মসমৰ্পণ করেছে। ভারতীয় বাহিনী উত্তরে পলাশবাড়ি, দক্ষিণে চাঁদপর এবং পশ্চিমে আশুগঞ্জ দিয়ে ঢাকা এলাকায় পাক বাহিনীকে ঘিরে রেখেছে।