পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড).pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

116 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ত্রয়োদশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ পূর্ববংগে গণহত্যা সম্পর্কে বৃটিশ পার্লামেন্টের | আনন্দবাজার ২৪ এপ্রিল, ১৯৭১ শ্রমিক দলীয় সদস্য মিঃ ব্রুস ডগলাস ম্যান-এর বক্তব্য ভিয়েতনামে মাইলাই একটি ব্যতিক্রম, আর গোটা পূর্ববঙ্গই মাইলাই -ডগলাস ম্যান (স্টাফ রিপোর্টার) কলকাতা, ২৪ এপ্রিল-ব্রিটিশ পার্লামেন্টর শ্রমিক দলের সদস্য মিঃ ব্রুস ডগলাস ম্যান আজ এখানে বলেন যে, ভিয়েতনামে মার্কিন ফৌজ সাধারণ মানুষের ওপর যে অত্যাচার চালিয়েছে, ইয়াহিয়াশাহীর বর্বরতা তাকেও হার মানিয়েছে। তিনি বলেন, ভিয়েতনামে মাইলাই একটি ব্যতিক্রম, আর গোটা পূর্ববঙ্গই মাইলাই। আজ সকালে কলকাতা প্রেসক্লাবে দেশী-বিদেশী সাংবাদিকদের এক বৈঠকে তিনি বলেন, পূর্ববঙ্গে নরহত্যা অভিযান বন্ধ করার জন্য, পাকিস্তান সরকারকে যুক্তির পথে চলতে বাধ্য করার জন্য সারা বিশ্বকে উপযুক্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভারতবর্ষ পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে বলে পাকিস্তান যে অভিযোগ করেছে, সে সম্পর্কে মন্তব্য করতে বলা হলে মিঃ ম্যান বলেন, এই ব্যাপারে ভারতবর্ষ যথেষ্ট সংযমের পরিচয় দিয়েছে। যথেচ্ছ নরহত্যাকে তিনি কোনমতেই একটি দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে মনে করতে পারেন না। কলকাতার পাক ডেপুটি হাইকমিশন যেভাবে আনুগত্য পরিবর্তন করেছে, ইংল্যান্ডে সেই রকম কিছু হলে আপনি কি করতে বলতেন?- এই প্রশ্নের জবাবে মিঃ ম্যান বলেন, তিনি একজন আইনজীবী। আইনের কথাই তিনি ভাবতেন। কেউ বাড়ী জবরদখল করেছে মনে হলে ইংল্যান্ডেও আইনের আশ্রয় নেওয়াই একমাত্র পথ। তিনি জানান, বৃটিশ পার্লামেন্টের ২২০ জন সদস্য পূর্ববঙ্গে যুদ্ধবিরতির দাবী জানিয়ে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাবের নোটিশ দিয়েছেন। এই প্রস্তাবের পক্ষে তিনিই প্রথম স্বাক্ষরকারী। ইংল্যান্ডে বাংলাদেশের জন্য যে সর্বদলীয় কমিটি গঠিত হয়েছে, মিঃ ডগলাস ম্যান তার চেয়ারম্যান। তাঁর ধারণা, ইংল্যান্ডের সরকারের মনোভাব পাল্টে গেছে। ওখানকার সংবাদপত্রগুলি সুস্পষ্ট ভাষায় পাকিস্তানী বর্বরতার নিন্দা করেছে। হাজার হাজার নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। এই হত্যা বন্ধ করার জন্য বৃটিশ এবং অন্যান্য সরকারকে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রয়োগ করতে হবে। মিঃ ম্যান অনেকগুলি উদ্বাস্ত্ত শিবির ঘুরে এসেছেন। শিবিরের ভিতরে গিয়ে তাঁরা কথা বলেছেন। ইংল্যান্ড কি বাঙালীদের সাময়িক সাহায্য দেবে? না। তবে কেউ দিলে বাধাও দেবে না। পরে মিঃ ম্যান বাংলাদেশ কূটনৈতিক মিশনে গিয়ে হাইকমিশনার জনাব হোসেন আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উভয়ের মধ্যে আর্তব্রাণ ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে আলোচনা হয়। তিনি বলেন, ভারতের পক্ষে একক এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। সারা বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। মিঃ ম্যান বলেন, মিঃ ষ্টোনহাউস এই সাহায্য সংগঠনের জন্যই এসেছেন।