পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খণ্ড
202

 ২। গেরিলা তৎপরতা সুষ্ঠুভাবে চালাবার জন্য ভেতরে গেরিলা ঘাঁটি তৈরী করতে হবে।

 ৩। গেরিলা ঘাঁটিগুলোতে শুধু গেরিলাই থাকবে না। কিছু সংখ্যক নিয়মিত বাহিনী লোকদেরও ঐ সমস্ত ঘাঁটিতে পাঠানো হবে যাতে গেরিলাদের সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে।

 ৪। খবরাখবর আনা-নেয়ার চন্য এক ইনটেলিজেন্স চেইন তৈরী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

 ৫। প্রত্যেক গেরিলা বেইস-এ একজন করে রাজনৈতিক উপদেষ্টা থাকবে। যার উপদেশে রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালিত হবে।

 ৬। প্রত্যেক গেরিলা ঘাঁটিতে একটি করে মেডিকেল টিম থাকবে। যারা গেরিলাদের চিকিৎসায় দায়িত্বভার এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

 ৭। গেরিলা ওয়ারফেয়ারের সাথে সাথে সাইকোলোজিক্যাল ওয়ারফেয়ারও চালিয়ে যেতে হবে যাতে করে পাকিস্তানী সৈন্যদের মনোবল নষ্ট হয়ে যায় এবং আমাদের জনসাধারণের মন অটুট থাকে।

 ৮। আমাদের সামরিক পরিকল্পনা (প্যাকটিক্যাল প্লান) এ রকম হওয়া উচিত যাতে করে পাক সেনাবাহিনী আইসোলেটেড হয়ে পড়ে।

 ৯। তাদের (পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে) প্রথম আইসোলেটেড করতে হবে। এবং পরে তাদের এনিহিলেট (নিশ্চিহ্ন) করতে হবে।

 ১০। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অস্ত্রশস্ত্র, যানবাহন, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদি যাতে চলাফেরা করতে না পারে সেজন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন করে দিতে হবে।

 ১১। পাকিস্তান যেন বাংলাদেশ থেকে কাঁচামাল বা ফিনিশড প্রডাক্ট রফতানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে না পারে সেজন্য এ দ্রব্য সামগ্রী সরকারী গুদাম ধ্বংস করতে হবে।

 ১২। কলকারখানা যেন চলতে না পারে সেজন্য বিদ্যুৎ এবং পেট্রোল ইত্যাদির সরবরাহ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত করতে হবে।

 ১৩। গাড়ি-ঘোড়া, রেলগাড়ী, বিমান, জলযান যেন ঠিকভাবে চলাচল করতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

 ১৪। যে সকল লোক পাক-সেনাবাহিনীর সহযোগিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে এবং চরম ব্যবস্থা নিতে হবে।

 ১৫। “বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে”- পাকিস্তানী শাসকদের এই প্রচারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। কনফারেন্স শেষে আমরা যার যার সেক্টরে চলে যাই। এবং সকল পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার জন্য আমাদের নিজ নিজ সেক্টরে পরিচালনা পরিকল্পনা নেই।

 আমি আমার ৩নং সেক্টরকে নিন্মলিখিত দশটি সাবসেক্টরে ভাগ করি। প্রত্যেকটি সাবসেক্টর যেসব সাবসেক্টর কমাণ্ডারদের অধীনে ছিল তাদের নামও দেয়া হলঃ

 ১। আশ্রম বাড়ি, ২। বাঘাই বাড়ি (এ দুটি সাবসেক্টরের কমাণ্ডার ছিল প্রথমে ক্যাপ্টেন আজিজ তারপর ক্যাপ্টেন এজাজ), ৩। হাতকাটা-ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান, ৪। সীমানা-ক্যাপ্টেন মতিন, ৫। পঞ্চবটি-ক্যাপ্টেন নাসিম, ৬। মনতলা, ৭। বিজয়নগর (এই দুই সাবসেক্টর-এর কমাণ্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন