পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

278 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড সাক্ষাৎকারঃ মেজর ওয়াকিউজ্জামানঞ্চ আমার পিতা ছিলেন এক্স-আর্মি ম্যান। ২৪ তারিখের দিকে পাকিস্তান আমি আমাদের বাড়িতে আসে। সিলেটের বাসায় আমরা ছিলাম না, অন্য বাসায় ছিলাম। তারা বাসা তছনছ করে চলে গেল। তাদের উদ্দেশ্য হলো আমার পিতাকে হত্যা করা এবং আমাদের উপর প্রতিশোধ নেওয়া। এরপর আমার এমন ঘৃণা জন্মে যে, আমি তাড়াতাড়ি মুক্তিবাহিনীর সাথে যোগ দেই এবং তারপর ইণ্ডিয়া চলে যাই। প্রশ্নঃ ইণ্ডিয়া আপনি কবে গেলেন? ইণ্ডিয়া আমি ক্রস করেছি ৩০ শে মার্চের দিকে। ৩০ শে মার্চে আপনি ইণ্ডিয়া গেলেন। ইণ্ডিয়ার আপনি কোথায় গেলেন? প্রথমে করিমগঞ্জে। করিমগঞ্জে তো ফোর সেক্টর হেডকোয়ার্টার ছিল। প্রথমে ছিল। যেখানে আমাদের রিক্রটমেন্ট করা হয়েছিল ওটা ছিল সেটেলমেন্ট অফিস। ওর কাছে একটি স্কুল ছিল, সেখান থেকে আমরা ট্রেনিং নিয়েছিলাম। প্রথমে আমাদের যখন সিলেকশান করা হলো সেটেলমেন্টে, ওখান থেকে আমাদের কলকলিঘাট নামক একটি জায়গা আছে সেখানে কিছুদিন ট্রেনিং চলে। যে ট্রেনিংটা হয়েছিল ওটা আমাদের বি-এস-এফ দিয়েছিল। আমাদের ভালো ট্রেনিং-এর জন্য পরে ইণ্ডিয়ান আর্মির কাছে পাঠানো হয়েছিল, সেটা ইন্দ্রনগরে ছিল। ওটা কতদিনের ট্রেনিং ছিল? ওখানে আমি এক মাস ছিলাম। কিন্তু আমি তিন সপ্তাহ ট্রেনিং করারপর আমাকে সিলেক শান করে নিয়ে আসলো ইন্টেলিজেন্সীর জন্য । আমাকে এক সপ্তাহ ট্রেনিং দেওয়া হয় ইন্টেলিজেন্সীর উপর এবং তারপর আমাকে সিলেটে পাঠানো হয় বিভিন্ন সংবাদ সংগ্রহের জন্য। প্রশ্নঃআপনি এ রকম কটা টাস্ক করেছেন? প্রথমবার একটাই অপারেশন, এ রকম একটা টাস্ক করতে এসেছি সিলেটে। আমার কাজটা ছিল কোন জায়গায় কি ধরনের ফোর্সেস আছে সে সম্বন্ধে জানানো। সে ইনফরমেশনটা আমি দিয়ে দেই এবং দেয়ার পর উনারা আমাকে একটা টাস্ক দেন। আমার সাথে কুমিল্লার দু’জন ছেলে ছিল, সিলেট টাউনের ভেতরে একটা এক্সপ্লোশন করার জন্য। কারণ সিলেট টাউনটা আমি যখন দেখেছি তখন সিলেট টাউনটা একেবারে নরমাল ছিল। দেখলে মনে হতো না যে বাংলাদেশের লোক স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে বা সংগ্রহ করছে। এ রকম কোন পরিস্থিতি সিলেট টাউনে ছিল না। ওটা কোন মাসে? ওটা ছিল মে-এর দিকে। আমি গিয়ে যখন এ কথাটা বললাম, পরে আমাকে ইণ্ডিয়ান ইকো সেক্টরের সেক্টর কমাণ্ডার ছিলেন ব্রিগেডিয়ার ওয়াটকে, তিনি আমাকে একটা মিশনের জন্য সিলেট পাঠালেনতুমি গিয়ে একটা এক্সপ্লোশন কর তখন লোকে বুঝবে যে সংগ্রাম হচ্ছে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হবে যাতে আরো লোক আমাদের দিকে আসে এবং পাকিস্তান আর্মি এতো ফ্রিলি যাতে মুভ করতে না পারে। যেদিন উনি বললেন তার পরের দিন আমরা রওনা হলাম।

  • ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে আংলাধেম সেনাবহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত। সাক্ষাৎকারটি প্রকল্প কর্তৃক ১৯৭৯ সালের ১০ এপ্রিল তারিখে গৃহীত।