পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
১০৯
শিরোনাম সূত্র তারিখ
যুদ্ধের হুমকি থাকলে সীমান্তে সৈন্যও থাকবে: প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা দৈনিক আনন্দবাজার ২৬ অক্টোবর, ১৯৭১

যুদ্ধের হুমকি থাকলে সীমান্তে সৈন্যও থাকবে

-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী

(বিশেষ সাংবাদদাতা)

 নয়াদিল্লী, ২৫ অক্টোবর-ভারতের প্রতি পাকিস্তানের যুদ্ধের হুমকি যতদিন বজায় থাকবে ততদিন সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের মোতায়েন রাখা হবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রী জগজীবন রাম ভারতের এই দৃঢ় সংকল্পের কথা আজ আবার ঘোষণা করেন।

 এখানে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে বক্তৃতা প্রসঙ্গে শ্রীরাম বলেন, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এমন কোন ব্যবস্থা নেবে না যাকে আক্রমনাত্মক কাজ বলা যেতে পারে। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে যে কেন আক্রমণ পূর্ণ শক্তি নিয়ে প্রতিহত করা হবে।

 প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেন যে আমাদের দেশ আক্রান্ত হলে আমরা শুধুমাত্র সীমান্ত রক্ষার ব্যবস্থা করেই তুষ্ট হবো না। শত্রুকে আমরা তাদের এলাকাতেই হটিয়ে নিয়ে যাবো। আমাদের দেশে নয়, লড়াই যাতে শত্রুভূমিতেই হয় আমরা সেই ব্যবস্থাও করবো।

 তিনি আরো বলেন, সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ দেয়া হলে ভারত দাবি জানাবে যে এক কোটি শরণার্থীর বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার দায়িত্ব ওই সব রাষ্ট্র নিক। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে ভারতে শরণার্থী আগমন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং ভারত থেকে শরণার্থীদের বাংলাদেশে ফেরার কাজও শুরু করতে হবে। শুধুমাত্র সেই অবস্থায় সৈন্য প্রতাহারের কথা ভারত বিবেচনা করবে।

 শ্রীরাম বলেন, পাকিস্তানী ক্যাণ্টনমেণ্টগুলো সীমান্তের এত কাছে যে, পাকিস্তান সৈন্য প্রত্যাহার করে নিলেও অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের আবার সীমান্তে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু ভারতের ক্যাণ্টনমেণ্টগুলি অধিকাংশই সীমান্তের ছয়শ থেকে নয়শ মাইল দূরে। কাজেই ভারতীয় সেনাদের সীমান্তে নিয়ে আসতে অনেক বেশী সময় প্রয়োজন।

 তিনি বলেন, ভারত সব সময়ই পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চেয়েছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে তাদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সাড়া পাওয়া যায়নি।

 প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ব্যাপারে ভারতের যে উদ্বেগ রয়েছে, সেটা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পক্ষে স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থায়িত্ব ক্ষুণ্ণ করার কুমতলবে পাক শাসকরা পূর্ব বাংলার বিপুলসংখ্যক নাগরিককে ভারতে পালিয়ে আসতে বাধ্য করেছে।