পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
২৭০

এবং বড়ই বাস্তবগ্রাহ্য এবং চমৎকার।” যখন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছে এই সমালোচনাটা পড়ে শোনানো হল তিনি তখন বললেন, “অভিজ্ঞ ব্যক্তির কাছেই ধরা পড়েছে- এইটাই আমার সান্ত্বনা।” তা সি আই এ সম্বদ্ধে এত খবর যারা রাখেন তাঁরা সি আই এ স্পেশালিষ্ট। ওঁরা সি আই এ বলে দুনিয়াকে খেপাচ্ছেন। এই তো নকশালপন্থিদের সি আই এ বলছেন। সবাই সি আই এ; তবে আপনারা কারা? সুতরাং! এত খবর রাখছেন কি করে? দালালের খবর দালালরাই রাখে। ‘দালালস্য দালাল’ যারা তারা রাখে।

(সরকার পক্ষের সদস্যগণের তুমুল টেবিল চাপড়ানি ও উল্লাস)

 সুতরাং মাননীয় উপাধ্যক্ষ মহাশয়, আজকে যে ঐতিহাসিক প্রস্তাব এসেছে তাকে আমরা সর্বান্তঃকরণে সমর্থন জানাচ্ছে। আমি………………………………………………

(বিরোধী পক্ষের বাধাদান)

 আমরা বক্তৃতার সময় যতই ওরা বাঘা দিন ও ‘দালাল’ বলে গালাগালি দিন আমি কখনই দাঁড়াইনি বা ভবিষ্যতেও করব না এ আশ্বাস প্রত্যেককে দিচ্ছি। কিন্তু মনে রাখবেন কাচের ঘরে বাস করে রাস্তার লোককে ইঁট মারলে বড় বিপদ হয়। Don’t pelt stones at passers by while you are living in a glass house. রাস্তার ধারে কাচের ঘরে বাস করে লোককে ইট ছুড়লে যা পরিণতি হয় তার জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকবেন। সরকারী আশ্রয় দালালি করে মেলে না। সত্য কথা বলে যাব। তাতে আপনাদের কাছে দালাল হতে পারি। চিরদিন ভারতবর্ষের আপামর জনসাধানণের দালাল হব। চীনের দালাল হব না, আমেরিকার দালাল হব না এবং বিড়লার দালাল হব না। মাননীয় উপাধ্যক্ষ মহাশয় খেয়েও পেট ভরছে না। আমেরিকার কাছ থেকে, চীনের কাছ থেকে, রাশিয়ার কাছ থেকে খেয়েও পেট ভরেনি, শেষকালে টাটা-বিড়লার কাছে গিয়ে হাত পাতছে। সুতরাং ওসব কথা বলে লাভ নেই।

(সরকার পক্ষের তুমুল হর্ষধ্বনি)

 ওসব নাটক করে লাভ নেই। আমরা জানি হু ইজ হু অ্যাণ্ড হোয়াট ই হোয়াট। এখনও চ্যালেঞ্জ করছি হরেকৃষ্ণবাবু ও তার দলের কাছে বলুন-ভারতবর্ষ অস্ত্র দিক, আমরা দাঁড়িয়ে বলছি পাকিস্তান কি চীন হামলা করলে আমরা এক সাথে দাড়িয়ে লড়ব। ঘরের লড়াই আমরা বিচার করব। কিন্তু সে উত্তর আসবে না। সুতরাং এখান থেকে ই বুঝবেন আসল লক্ষ্যটা কি।

 আমি আমার বক্তব্য শেষ করবার আগে আবার বলছি যে, বাংলাদেশে………………………

(গোলমাল)

 মাননীয় উপাধ্যক্ষ মহাশয়, আপনাকে তো হাউসের শান্তি রক্ষা করতে হবে। তা না হলে এটা তো একতরফা যাবে না। আপনাকে তো আমাকে প্রোটেক্ট করতে হবে। তা না হলে প্রিভিলেজ আমারও ভায়োলেটেড হবে।

 আজকে তাই বলছি, যে প্রস্তাব এসেছে তাকে সমর্থন করছি এবং ওপার বাংলায় যে ঐতিহাসিক লড়াই চলছে তাকে কেউ ব্যর্থ করে দিতে পারে না। যাঁরা বলছেন ওপার বাংলা থেকে আমাদের প্রেরণা পাবার কিছু নেই তাঁরা ভুল। যদি ভিয়েতনাম থেকে প্রেরণা পাওয়া যেতে পারে, যদি রুশ বিপ্লব থেকে প্রেরণা পাওয়া যেতে পারে তাহলে আমি বলব ভারতবর্ষের ৫৩ কোটি মানুষ আজকে সবচেয়ে বেশি প্রেরণা পাবে ওপার বাংলার বঙ্গবন্ধু মুজিবের নেতৃত্বে যে লড়াই হচ্ছে। এবং সর্বশেষে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কথায় বলিঃ-

(বিরোধী পক্ষের হাস্যরোল)

 বিশ্বকবির নাম হতেই এত ব্যঙ্গ কেন বুঝতে পারছেন। কারণ রবীন্দ্রণাথ ওদের কাছে বুর্জোয়া কবি।