পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৩২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
২৯৮
শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশের ঘটনাবলীতে ভারতের বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া দৈনিক ‘যুগান্তর’ ২৮ মার্চ, ১৯৭১

কলকাতায় পাক দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ, মিছিল

 রবিবার সকালে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র পরিষদের (চৌরঙ্গী) উদ্যোগে পূর্ববঙ্গে মিলিটারী দাপটের প্রতিবাদে এবং সেখানকার জনগণের আন্দোলনের সমর্থনে একটি বিক্ষোভ মিছিল পাক ডেপুটি হাই কমিশন ভবনের সামনে সমবেত হয়।

 ভবনের গেটের উপরে বাংলাদেশ এবং কংগ্রেস পতাকা টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়।

ছাত্র পরিষদ কর্মীদের অনশন ধর্মঘট

 বাংলাদেশের সংগ্রামী জনতার সমর্থনে ছাত্র পরিষদের (মহাজাতি সদনের) সভ্যগণ রবিবার ডাঃ সুন্দরী মোহন এভেনিউ ও হাতিবাগান রোডের মোড়ে সারা দিনব্যাপী অনশন ধর্মঘট পালন করেন। ছাত্ররা গান্ধীজীর মাল্যভূষিত মূর্তি সামনে রেখে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত ও কাজী নজরুল এবং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কবিতা পাঠ করেন।

 শেখ মুজিবের প্রতি ছাত্র সমাজের অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন ছাত্রকর্মী ও নেতা ওখানে সারাদিন তাঁদের বক্তব্য রাখেন।

বালকদের অনশন

 “বাংলাদেশের” শোষণ মুক্তির সংগ্রামে সমর্থন এবং পাকিস্তান সরকারের জঙ্গীশাহী দমন পীড়নের প্রতিবাদে যুব কংগ্রেসের ডাকে বি ও আর ক্যাম্প, কলিকাতা ৪০-এর মাঠে নিন্মলিখিত ১০ থেকে ১৪ বৎসর বয়স বালকরা রবিবার অনশনের মাধ্যমে বিক্ষোভ প্রকাশ করেনঃ- দিলীপ কুমার দাস, সুজিত ঘোষ, বিষ্ণু বসু, গৌতম রায়, অধিক্রম দাস, বীর বিক্রম দাস, সুবিক্রম দাস, ফটিক দে, রঞ্জন গোস্বামী, নির্মল কৃষ্ণ দে, ত্রিবিক্রম দাস ও সুবীর সরকার। এছাড়া শ্রীমতি লীলা বসু (৫৯) ও শ্রীমতি টুকুরানী দাস (৪২) অনশন করেন।

স্বাধীন সরকারকে স্বীকৃতি দিতে জনসংঘের দাবি

 রবিবার বিকালে ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট হলে জনসংঘের আহ্বানে এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান হয়। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক হরিপদ ভারতী।

 অধ্যাপক ভারতী বলেনঃ বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র রূপে ঘোষণার সাথে সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের ফৌজী নায়ক যুদ্ধবাজ খুনী ইয়াহিয়া খাঁ ও তাঁর অনুগামীরা ব্যাপক গণহত্যা শুরু করা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তরুণ মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে রক্ত দিয়ে সমস্ত আক্রমণের মোকাবিলা করেছেন তার জন্য এপার বাংলার মানুষরূপে আমরা গর্বিত। আমরা মনে করছি বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ আগামী দিনে অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার দিকনির্ণয় করবে।

 অধ্যাপক ভারতী তার ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীন সরকারকে স্বীকৃতি দান এবং বিশ্বের জনমতকে জাগ্রত করে রাষ্ট্র সংঘের মাধ্যমে সাহায্য দানের ব্যবস্থা করার দাবি করেন।

 সভায় শ্রী শক্তিশেখর দাস বাংলাদেশের তরুণদের কাছ থেকে দেশপ্রেমের এবং দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকারের শিক্ষা নেবার আহ্বান জানিয়ে বক্তৃতা করেন।