পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৪১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
৩৮৭
শিরোনাম সূত্র তারিখ
জয়প্রকাশ নারায়ণ কর্তৃক বাংলাদেশ প্রশ্নে লণ্ডনে বিশ্ব সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা দৈনিক যুগান্তর ৫জুন, ১৯৭১

বাংলাদেশের শান্তি ফিরিয়ে আনতে বিশ্ব সফরের

অভিজ্ঞতা বর্ণনা

(বিশেষ প্রতিনিধি সুন্দর কাবাদি)

 লণ্ডন, 8ঠা জুন- সর্বোদয় নেতা শ্রী জয় প্রকাশ নারায়ণ গতকাল বিকেলে এখানে এসেই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন বৃটিশ রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। প্রথমই তিনি দেখা করেন কমনওয়েলথ রিলেশনস অফিসের মিঃ এন্থনী কেরশার সঙ্গে। মিঃ কেরশা ভারত-পাক সমস্যা সম্বন্ধে বিশেষভাবে ওয়াকিবহাল।

 শ্রী নারায়ণ বলেছেন, পাক সামরিক বাহিনীর গণহত্যার ফলে বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী ভারতে চলে আসায় যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সেই ব্যাপারে বৃটিশ সরকারের যথেষ্ট সহানুভর্তি রয়েছে। মিঃ কেরশা ভারতের এই সমস্যায় বৃটিশ সরকারের অকুণ্ঠ সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।

 শ্রী নারায়ণের মতে, পশ্চিম পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য বন্ধ করার ব্যাপারে পশ্চিমা শক্তিগুলির অনিচ্ছার কারণ আছে দুটি। একটি হোল পশ্চিমী শক্তিগুলি মনে করছে সাহায্য বন্ধ করলে পাকিস্তানের কাছে আগেকার পাওনা টাকা হয়তো ফেরৎ পাওয়া যাবে না। দ্বিতীয়তঃ প্রয়োজনীয় আর্থিক সাহায্য না পেলে পাকিস্তান সাহায্য লাভের জন্য হয়তো চীনের দ্বারস্থ হবে।

 শ্রী নারায়ণ এ আগে কায়রো, রোম বেলগ্রেড, মস্কো, হেলসিঙ্কি, বন এবং প্যারিস ঘুরে এসেছেন। রবিবার শ্রী নারায়ণ লণ্ডন ত্যাগ করেছেন। তিনি এরপর ওয়াশিংটন এবং অটোয়া সফরে যাবেন। তাঁর সফরের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের সমস্যা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহানুভূতি প্রতিষ্ঠা এবং সেখানকার জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার অর্জন করা।

সমাজতন্ত্রী নেতাদের মনোভাব

 গত সপ্তাহে শ্রী নারায়ণ হেলসিঙ্কি সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তখন আন্তর্জাতিক সমাজতন্ত্র সম্মেলন হচ্ছিল। এই সুযোগে শ্রী নারায়ণ বহু দেশের সমাজতন্ত্রী নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে পেরেছেন। যাঁদের সঙ্গে এখানে তাঁর কথাবার্তা হয়েছে তাঁদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিম জার্মানীর চ্যান্সেলার উইলি ব্রাণ্ট, বৃটেনের বিরোধী দলের নেতা হ্যারল্ড উইলসন নরওয়ে ও সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় এবং ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও নেদারল্যাণ্ডের সমাজতন্ত্রী দলের নেতৃবর্গ।

 এই নেতৃবর্গের সঙ্গে শ্রী নারায়ণের আলাপ-আলোচনা বেশ সন্তোষজনক হয়েছে। মিঃ ব্রাণ্ট বাংলাদেশের সমস্যা সম্পর্কে যথেষ্ট সহানুভূতিশীল হওয়া সত্ত্বেও তিনি জানিয়েছেন পশ্চিম জার্মানী পাকিস্তানের উপর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে অক্ষম।

 শ্রী নারয়ণ এই নেতৃবর্গের সঙ্গে সম্মেলনের বাইরে দেখা করেছেন এবং কথাবার্তা বলেছেন। এরপর তিনি বনে যান এবং সেখানে পার্লামেণ্ট সদস্য এবং ক্রিশ্চান ডেমোক্যাট পার্টির সদস্যদের সঙ্গে তিনি কথাবার্তা