পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৯২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brbと。 বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খন্ড অধিকার আমাদের সৈন্যরা পাবে না কেন? সেরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে কবে? প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মহোদয় কোন সময়ের প্রতীক্ষায় আছেন? এ যাবত যা হয়েছে, তা যদি হামলা হয়, তবে কোন নতুন হামলার প্রতীক্ষা করার আগে বলা হয়েছিল, পাকিস্তান বিমান ফেলে দেয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে পাকিস্তানের বিমান তাড়িয়ে দেয়া হবে। আমরা এ যাবত তাদের একটি বিমানও ফেলতে পারিনি। তারা ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্সএর বিমান ধাওয়া করেছে। গুজরাটের ভূতপূর্ব মুখ্যমন্ত্ৰী শ্রী বলবস্ত রায় মেহতা কোন পরিস্থিতিতে নিহত হয়েছিলেন তা এই সংসদ এবং এই দেশ ভুলতে পারে না। আমরা কতদিন পর্যন্ত আমাদের আকাশ সীমার অবিরাম লঙ্ঘন বরদাশত করব? পাকিস্তানের একটি বিমানও ফেলে দেবার মত অবস্থা আমাদের পক্ষে নেই, আমি একথা মানতে রাজি নই। সম্ভবতঃ বিমান বাহিনীকে বিমান নামানোর আদেশ দেয়া হয়নি। ...তিনি আমাদের স্থল বাহিনীর সৈন্যদের শত্রর সীমাতে চলে যাওয়ার যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন, তাও ফিরিয়ে নেয়ার আবশ্যকতা রয়েছে। শত্রু নিজ ভূ-খন্ড হতে অবিরাম গুলি বর্ষণ করতে থাকলে আমাদের সেনাবাহিনী তাদের সীমায় ঢুকে, যেখান থেকে গুলি বর্ষণ করা হয়, সেখানে আক্রমণ চালিয়ে তাদেরকে স্তব্ধ করার অধিকার থাকতে হবে। আমি যখন আক্রমণের কথা বলি আত্মরক্ষার জন্য বলি। আত্মরক্ষার জন্য আমাদেরকে আক্রমণ চালাতে হতে পারে। আরেকটা প্রশ্ন আছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মহোদয় বলেন যে, আমাদের সেনাবাহিনী সীমান্ত হতে তখনই চলে যাবে যখন কোন সমাধান বের হবে, বাংলাদেশ সমস্যার এরূপ সমাধান হতে হবে যা পূর্বের নির্বাচিত লোকেরা মেনে নেবেন। যাঁরা প্রথমে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে কিছু কারারুদ্ধ আছেন, কিছু গোপনে আছেন। তাদের স্থলে জেনারেল ইয়াহিয়া খাঁ নতুন লোক নির্বাচন করছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনে যারা হেরে গিয়েছিলেন তারা পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতিনিধি হয়ে আছেন। সেখানে একটি পুতুল সরকার প্রতিষ্টা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় যারা আগে নির্বাচিত হয়েছিলেন তারা নির্ভীক ও নিরপেক্ষভাবে, নিঃসঙ্কোচে, নিজেদের কথা বলতে পারবেন কি? বিশ্ব মতের ভরসায়, বিশ্বের সহানুভূতির আশায় আমরা কি নিজ রাষ্ট্রের স্বাৰ্থ বলি দিতে যাচ্ছি? আমি জানি না শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে আছেন কি-না। আগামিতে ইয়াহিয়া খাঁ তাঁকে ছেড়ে দেবার নাটক রচনা করতে পারেন। দীর্ঘ আলোচনা চলতে পারে। যে এক কোটি লোক এখানে এসেছে, এখন তাদের কি দশা হবে? ...ভারত সরকারের কোন মুখপাত্র কি একথা বলতে রাজি আছেন- আমি প্রতিরক্ষা প্রশ্ন করছি-যখন পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বাধীন না হবে, এবং স্বাধীন বাংলাদেশ একটি অসম্প্রদায়িক সেকুলার সরকার প্রতিষ্ঠা না হবে, তখন পর্যন্ত শরণার্থীদের ফিরে যাবার কোন আশা করা যায় না? রাজনৈতিক সমাধানের ডাক উঠেছে। বিশ্বরাষ্ট্রসমূহ চাইবে না পাকিস্তান ভেঙ্গে যাক। কিন্তু পাকিস্তানের সৈন্য যদি বাংলাদেশে থাকে তাহলে শরণার্থী কি ফিরে যাবে? বিগত ২৪ বছরে যারা এসেছে তাদের মধ্যে কেউ কি ফিরে গেছে? শরণার্থী মাঝে আমারও যাবার সুযোগ হয়েছে। বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের অংশ থাকে, শরণার্থীদের ওপর অশেষ নির্যাতনকারী পাক সেনা যদি সেখানে থাকে, তবে শরণার্থী ফিরে যাবে না। সে সময় আমরা এমন রাজনৈতিক সমাধান কিভাবে আনব যার ফলে শরণার্থী ফিরে যেতে পারে? মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে না। আমি জানতে চাই, ভারত সরকার কি পাকিস্তানী সামরিক জান্তাকে এই টষঃরসধঃস দিতে রাজি আছে যে, সাত দিনের মধ্যে আক্রমণাত্মক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে, নচেৎ ভারতের জন্য এখন রাস্তা খোলা আছে। এটি পাকিস্তানের ওপর আক্রমণ চালানোর প্রশ্ন নয়, বরং যে হামলা ইতিমধ্যে হয়েছে তার জবাব দেবার প্রশ্ন। এবং এই সরকার জবাব দিতে প্রস্তুত আছে কিনা আমি এটাই জানতে চাই। ..........