পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

266 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড সমাজতন্ত্রের দিকে অগ্রগতির স্বার্থে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের উদ্দেশ্যে নিজেদেরকে, পার্টি ও জনগণকে সংগঠিত করার জন্য পার্টির সকল সদস্যের প্রতি আহবান জানাইতেছে। এই উদ্দেশ্যে আমরা নিম্নলিখিত দাবীসমূহ আদায়ের জন্য সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সকল পাকিস্তানীকে ঐক্যবদ্ধ গণ আন্দোলন গড়িয়া তোলার আহবান জানাইতেছিঃ ১। বর্তমান আইন পরিষদগুলি ভাঙ্গিয়া দিয়া প্রত্যক্ষ ও প্রাপ্তবয়স্কের সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নূতন আইন পরিষদ নির্বাচন করিতে হইবে এবং অনুরূপভাবে নির্বাচিত পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নিম্নোদ্ধৃত বিষয়গুলির ব্যবস্থা করার জন্য শাসনতন্ত্র সংশোধন করিবেনঃ (ক) ফেডারেল শাসন ব্যবস্থার অধীনে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনসাধারণের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান। পাকিস্তানের উভয় অংশকে পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রদান। কেবলমাত্র দেশরক্ষা, বৈদেশিক সম্পক ও মুদ্রা এই তিনটি বিষয়ের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের উপর ন্যস্ত থাকিবে। অন্যান্য সকল বিষয়ের দায়িত্ব পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সরকারের উপর ন্যস্ত থাকিবে। (খ) সংস্কৃতি ও ভাষার সমতা এবং ভৌগলিক সংলগ্নতার ভিত্তিতে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রদেশসমূহকে স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ হিসাবে পুনর্গঠন পশ্চিম পাকিস্তানের পুনর্গঠিত প্রদেশসমূহের গণতান্ত্রিক গঠন কাঠামো একইরূপ হইবে এবং তাহারা (প্রদেশসমূহ) একটি আঞ্চলিক ফেডারেশনে ঐক্যবদ্ধ হইবে। এই ফেডারেশনের আইন পরিষদে কোন প্রদেশই নিজের সংখ্যাধিক্যের বলে একত্রে অবশিষ্ট প্রদেশসমূহ অপেক্ষা বেশীসংখ্যক আসনের অধিকারী হইতে পরিবে না এবং প্রদেশসমূহের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ যে সকল বিষয়ে একমত হইবেন,পরিষদ সেই সকল সাধারণ বিষয় কার্যকর করিবে। একটি আঞ্চলিক ফেডারেশনের দ্বারা বর্তমান এক-ইউনিট ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার উপরোক্ত লক্ষ্য শাসনতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জন করা হইবে। বর্তমান উপজাতীয় এলাকা, দেশীয় রাজ্য, ইজারাধীন এলাকা, এজেন্সী সমূহ ও অনুরূপভাবে এলাকাসমূহকে সন্নিহিত প্রদেশগুলির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে যুক্ত করিতে হইবে। যাযাবর, আধা-যাযাবর ও উপজাতীয় জীবনের সুযোগ- সুবাধাদি ভোগ করিতে পারে। সকল পাকিস্তানীর মধ্যে সৌভ্রাতৃত্ব বোধের বিকাশকে উৎসাহিত ও শক্তিশালী করিতে হইবে। সামাজিক সম্পর্ক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়কে উৎসাহিত করিতে হইবে। এবং উভয়াঞ্চলীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও স্বল্পব্যয়সাধ্য করিতে হইবে। (গ) পরিষদগুলিকে আইন ও বাজেট পাশের পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করিতে হইবে এবং প্রেসিডেন্ট ও গভর্নরগণের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রহিত করিতে হইবে। (ঘ) জনগণকে মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা দিতে হইবে এবং জাতিসংঘ কর্তৃক ১৯৪৮ সালে মানবাধিকার সনদে স্বীকৃত সকল অধিকার ভোগ করিতে দিতে হইবে। ২। পূর্ণ ব্যক্তি স্বাধীনতার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ঘোষিত জরুরী অবস্থা প্রত্যাহার করিতে হইবে। সকল দমনমূলক আইন প্রত্যাহার করিতে হইবে। ৩। প্রিন্স করিম, আবদুস সামাদ খান আচাকযাই, আতাউল্লাহ খান মেঙ্গলমণিকৃষ্ণ সেন, আবদুল হালিমসহ রাজনৈতিক কারণে সাজাপ্রাপ্ত ও বিনা বিচারে আটক পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সকল