পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

453 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড পূর্ব বাংলা জনগণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কর্মসূচী জনগণতান্ত্রিক শিক্ষা-সংস্কৃতির রূপরেখা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাঃ রাষ্ট্ৰীয় ব্যবস্থা হইবে সাম্রাজ্যবাদ, বিশেষ করিয়া মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা মুৎসুদি বৃহৎ পুঁজি বিরোধী শ্রমিক, কৃষক, বুদ্ধিজীবী ও পেটিবুর্জোয়া শ্রেণীর অন্যান্য অংশ এবং দেশপ্রেমিক জাতীয় বুর্জেয়া শ্রেণীসমূহের যৌথ একনায়কত্ব-শ্রমিক নেতৃত্বে ইহা পরিচালিত হইবে-ইহা হইবে “পূর্ব বাংলা জনগণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র”। রাজনৈতিক কাঠামোঃ রাজনৈতিক কাঠামো গড়িয়া উঠিবে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীয়তার নীতির ভিত্তিতে। রুপরেখা হইবে নিম্নরুপঃ (১) কেন্দ্র হইতে একেবারে নিম্নপর্যায় পর্যন্ত জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট দ্বারা নির্বাচিত গণপরিষদসমূহ (-- -". "- - - - - - - - - - ww - Μ-ΑΜ- - - w" - ) থাকিবে যেমন, জাতীয় গণপরিষদ, জিলা গণপরিষদ, থানা গণপরিষদ, ইউনিয়ন গণপরিষদ। জাতীয় গণপরিষদ হইবে “পূর্ব বাংলা জনগণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের’ সর্বোচ্চ সংস্থা এবং ইউনিয়ন গণপরিষদ হইবে নিম্নতর সংস্থা। (২) এই গণপরিষদগুলি বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাসমূহ (-------------- ) নির্বাচিত করিবে। (৩)এই গণপরিষদগুলির নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকিবে। নির্দিষ্ট মেয়াদের পর পুনর্বার নির্বাচনের ব্যবস্থা থাকিবে। তাহা ছাড়া নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যেও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অপসারিত করিয়া নতুন প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার জনগণের থাকিবে। (৪)গণপরিষদসমূহে নির্বাচনের ভিত্তি হইবে শ্রেণী ও পেশাভিত্তিক। সকল বিপ্লবী শ্রেণীগুলি যাহাতে তাহাদের সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সমানুপাতিক হারে (-----------) প্রতিনিধিত্ব করিতে পারে সেই জন্য নারী, পুরুষ এবং সকল ধর্ম, জাতি,পেশা ও শিক্ষা নির্বিশেষে একটি সত্যিকার সার্বজনীন ও সমভোটাধিকার ব্যবস্থা (-------------- ) প্রবর্তন করা হইবে। (৫)এইভাবে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে “পূর্ব বাংলা জনগণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের” সংস্থাসমূহের সম্পর্ক হইবে নিম্নরুপঃ (ক) বিভিন্ন নিম্নতর সংস্থাসমূহ তাহদের নিজেদের স্বার্থে স্বেচ্ছায় জাতীয় সরকারকে যে ক্ষমতা ও দায়িত্ব প্রদান করিবে, ইহা তাহাই পালন করিবে। (খ) নিম্নতর সংস্থাগুলি কর্তৃক স্বেচ্ছায় প্রদত্ত ক্ষমতা ও দায়িত্বের ভিত্তিতে জাতীয় সরকার যে নির্দেশাবলী প্রদান করিবে, নিম্নতর সংস্থাগুলি তাহা মানিয়া চলিতে বাধ্য থাকিবেঃ ইহাই গণতান্ত্রিক কেন্দ্রকতার নীতি। গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার নীতির মাধ্যমে পরিচালিত একটি সরাকারই জনগলণর বিভিন্ন বিপ্লবী অংশের মতামতের সার্থক প্রতিনিধিত্ব করিতে পারে এবং বিপ্লবের শত্রদের সম্পূর্ন কার্যকরীভাবে প্রতিহত করিতে পারে। (গ) জাতীয় সরকার ব্যতীত অন্যান্য নিম্নতর সংস্থাগুলির পাস্পরিক সম্পর্ক ও এই গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত হইবে। গণতান্ত্রিক অধিকারঃ নারী, পুরুষ এবং সকল ধর্ম, জাতি, বর্ণ, পেশা ও শিক্ষা নির্বিশেষে সকল বিপ্লবী শ্ৰেণীসমূহের যথা শ্রমিক, কৃষক, বুদ্ধিজীবী, মধ্যবিত্ত, ছোট ও মাঝারী ব্যবসায়ী ও দেশপ্রেমিক জাতীয় বুর্জোয়া শ্রেণীর সকল রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার থাকিবে। কিন্তু জনগণের শত্রু সাম্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলামুৎসুদি বৃহৎ পুঁজিপতিদের তাহদের সহযোগী প্রতি বিপ্লবীদের কোন রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার থাকিবে না।