পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

526 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ আইনগত কাঠামো আদেশের প্রতিবাদ এবং ৬ ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ ৫ এপ্রিল, ১৯৭০ ১১-দফা প্রতিষ্ঠার দাবী দিবস ইয়াহিয়ার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ৭ই এপ্রিল মঙ্গলবার “দাবী দিবস’ ১৯৬৯ সনের ৬-দফা সম্বলিত ঐতিহাসিক ১১-দফার ভিত্তিতে গত শহীদের রক্তের বিনিময়ে গড়িয়া উঠা গণঅভু্যত্থানের পটভূমিতে দেশব্যাপী সামরিক শাসন জারি করা হইয়াছিল। সামরিক আইন জারির পর জেনারেল ইয়াহিয়া খান বিভিন্ন সময়ে তাঁহার বক্তব্যের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ঘোষণা করিয়াছিলেন। ইয়াহিয়ার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে দেশবাসী আশা করিয়াছিল যে বাংলার স্বায়ত্তশাসনের দাবীসহ সমাজের বিভিন্ন মূল সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত সার্বভৌম পার্লামেন্ট-এর উপর ন্যস্ত হইবে। দীর্ঘ বার বছরের আইয়ুবের অগণতান্ত্রিক সরকারের মূল উচ্ছেদ করিয়া সারাদেশে যে মুহুর্তে শর্তবিহীন নিরংকুশ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হইবার সামান্যতম সম্ভাবনা দেখা দিয়াছিল গত ২৮শে মার্চে ইয়াহিয়ার ভাষণ ও ৩০শে মার্চ তারিখে ইয়াহিয়ার ঘোষিত “ শাসনতান্ত্রিক আইনগত কাঠামো” ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সে আশা দূরীভূত হইয়াছে। শুধু তাহাই নয় জনজীবনে এক বিরাট জিজ্ঞাসা দেখা দিয়াছে যে- “তাহা হইলে বাংলার ও বাঙ্গালীদের কি দশা হইবে।” ইয়াহিয়া ঘোষিত আইনগত কাঠামোতে একটি দিক লক্ষ্যণীয় যে পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের সংহতি ও অখন্ডতাকে জোর করিয়া চাপাইয়া দিবার চেষ্টা করা হইয়াছে। বিশেষ করিয়া আইনগত কাঠামোর ২৫নং বিধিতে গণপরিষদের উপর সন্দেহ প্রকাশ ও ২৭নং বিধিতে ইয়াহিয়ার একনায়কত্বমূলক যে মনোভাব প্রকাশ পাইয়াছে তাহা সকলের মূলনীতিবিরোধী। দেশের আপমর জনসাধারণের সার্বিক মঙ্গলের দিকে লক্ষ্য রাখিয়া আমরা স্পষ্টভাবে জানাইয়া দিতে চাই যে ইয়াহিয়া প্রণীত এই নীতিমালা কোন ভাবেই এদেশের সংগ্রামী মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলার সাত কোটি মানুষের বাঁচিয়া থাকিবার উপায় হিসাবেই ৬-দফা ও ১১-দফা দাবী সংগ্রামের মধ্য দিয়া এ দেশবাসীর মনের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর খেয়ালের উপর নির্ভর করিয়া ৬দফা ও ১১-দফা দাবীকে আমরা কোনভাবেই নস্যাৎ হইতে দিব না। আমরা মনে করি একমাত্র ৬-দফা ও ১১-দফার বাস্তবায়নই পাকিস্তানের অখন্ডতাকে বজায় রাখিতে পারে এবং স্বায়ত্তশাসন ও ভাবী শাসনতন্ত্রের প্রশ্নে বাংলার জাগ্রত মানুষ ৬-দফা ও ১১-দফার সামান্যতম বিচূতিও স্বীকার করিবেন না বরং প্রয়োজনবোধে আরও দুর্বার আন্দোলন সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলার ছাত্র-শ্রমিক, কৃষক ও মেহনতি মানুষ বাংলা পুনর্বার সরকার সেই একই শিক্ষানীতিকে পিছন দরজা দিয়া চালু করিবার চেষ্টায় লিপ্ত রহিয়াছে। আমরা পুনরায় এই শিক্ষানীতির প্রতি আমাদের অনাস্থা প্রকাশ করিতেছি। সারাদেশে বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজমান থাকা সত্ত্বেও বর্তমান সামরিক সরকার ছাত্র-শ্রমিক, কৃষক ও রাজনৈতিক কর্মীদের সামরিক আইনে গ্রেফতারপূর্বক বিভিন্ন দন্ডে দন্ডিত করিতেছে। আজ ছাত্রনেতা খসরু,