পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

536 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ছাত্রলীগ আহুত জরুরী সভার প্রস্তাবাবলী পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সার্কলার | ২৩ জুলাই, ১৯৭০ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের ২২ এবং ২৩শে জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত শোক প্রস্তাবঃ আফ্রো-এশিয়ার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মহান শিক্ষাগুরু, সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদবিরোধী আন্দোলনের পুরোধা, আধুনিক ইন্দোনেশিয়ার জনক “বাংকার্নো”, বৃহৎ শক্তি জোটবহির্ভূত তৃতীয় জোটের জনক, নয়া উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের শিকার ইন্দোনেশিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ আহমদ সুকানোর মহাপ্রয়াণে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের অদ্যকার এই সভা গভীর শোক প্রকাশ করিতেছে এবং তাঁহার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করিতেছে। রাজনৈতিক প্রস্তাবঃ এই সভা গভীর উদ্বেগের সহিত দেশের রাজনৈতিক অবস্থার ক্রম-অবনতি লক্ষ্য করিতেছে। আগামী সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশবাসী যখন গভীর আগ্রহের সহিত নির্বাচনে সহায়ক সুষ্ঠ গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার আশা করিতেছিল, ঠিক সেই মুহুর্তে সরকার কর্তৃক ছাত্র, শ্রমিক এবং রাজনৈতিক নেতৃ ও কর্মীদের উপর সরকারী নির্যাতন ও নিষ্পেষণের খড়গ নামিয়া আসিয়াছে। ব্যাপকহারে সামরিক আইনের অপপ্রয়োগ ঘটাইয়া ছাত্র-শ্রমিক, রাজনৈতিক নেতৃ ও কর্মীবৃন্দকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডে দন্ডিত করা হইতেছে। অধিকার এবং রুটি-রুজির দাবী তুলিয়া শ্রমিক পাইতেছে কারাদন্ড -বেত্রদন্ড, গুলি, বেয়নেট; খাদ্য ও কর মওকুফের দাবী তুলিয়া কৃষক পাইতেছে চরম নির্যাতন, মেহনতী জনতা বাঁচার নূন্যতম সিদ্ধিরগঞ্জের পাওয়ার ষ্টেশনের শ্রমিকদের শাস্তিদান সম্পর্কিত পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পুরোধা এবং জননেতা এম, এ, আজীজের গ্রেফতারজনিত পরিস্থিতি দেশের জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সঞ্চার করিয়াছে। এই সভা মনে করে যে দেশের ছাত্ৰ-কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী জনতা এবং রাজনৈতিক নেতৃ ও কমীবৃন্দেও উপর এই নির্যাতনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ নীরব দর্শক হইতে পারে না। যেহেতু পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ দেশের আপামর জনগণের উপর যে কোন মহলের চক্রান্তকে নস্যাৎ করিয়া দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধমূল। এবং যেহেতু সরকারী নির্যাতন এই গণতান্ত্রিক সরকার গঠন তথা নির্বাচনের সহায়ক গণতান্ত্রিক পরিবেশ গঠনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। উপরোক্ত কারণে এই সভা সরকারের নিকট আগামী ৩১শে জুলাই, ১৯৭০ তারিখের মধ্যে সর্বপ্রকার নির্যাতনমূলক পথ প্রত্যাহার করিয়া নিম্নলিখিত দাবীগুলি পূরণের জোর দাবী জানাইতেছেঃ (১) জননেতা এম, এ, আজীজ, মন্টু, সেলিম, হোসেন, বিমলসহ সকল ছাত্র-শ্রমিক-রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিতে হইবে। (২) সকল ছাঁটাইকৃত বা সাসপেন্ডকৃত শ্রমিক বা ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে কাজে পুনর্বহাল করিতে হইবে ও তাহাদের ন্যায্য দাবী মানিয়া লইতে হইবে।