পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চদশ খণ্ড).pdf/২৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চদশ খণ্ড

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চদশ খণ্ড এমপি সাহেব। মুক্তি বাহিনী সবসময় এ অঞ্চলে অবস্থান করতো এবং কোন সময় এ অঞ্চল পাক বাহিনী অধিকার করতে পারেনি।

 বর্বর পাক বাহিনী যুদ্ধকালে সিলেটে অনেক নির্যাতন চালিয়েছে। শুধুমাত্র মৌলভীবাজারে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে ৪০০ নিরীহ মানুষকে পাক বাহিনী হত্যা করে। ৪/৫ হাজার বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেয়। যুদ্ধ আমরা হারিয়েছি মুকিত, সহীদ, রানু, সুদর্শন নরেশ, অরুণ, মনির মিয়া, খোকা, কাজলসহ নাম না জানা আরো অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।

মোহাম্মদ আজিজুর রহমান
গণপরিষদ সদস্য, ( সাবেক এম,পি,এ) সিলেট
২২ অক্টোবর, ১৯৭৩।


আবদুর রব, মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত

 স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে আমি এতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করি। ১০ ই এপ্রিল ভারতে যাই এবং আগরতলা অবস্থান করি। ইষ্টার্ন জোনের এক থেকে চারটি সেক্টরের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়। এখানে মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করি। ভারতে জেনারেল মানেক শা, জেনারেল অরোরা জেনারেল গিল,জেনারেল সরকার, জেনারেল কালকাট প্রমুখ অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি। ৭ই মে তারিখে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আমি মুক্তিবাহিনী ইপিআর-দের নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে অপারেশন চালাই। হবিগঞ্জ থেকে শুরু করে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, শমসেরনগর, শেরপুর, সিলেট প্রভৃতি স্থানে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলি। পাক বাহিনীর সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আমাদের দু'জন সৈন্য শহীদ হয়। অন্যদিকে পাক বাহিনীর ১৫/২০ জন সৈন্য মারা যায়।

 পাক বর্বর বাহিনী মাখালকান্দি, জিলুয়া, কাটাখালী, আরিয়ামুগুর, বদরপুর, রাজেন্দ্রপুর,রুমিয়া প্রভৃতি গ্রাম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তারা মাখালকান্দি গ্রামটি প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করে। পাক বাহিনী আমার এলাকায় প্রায় ৫০০ জন লোককে হত্যা করে। শুধুমাত্র মাখালকান্দিতেই ৩০০ জনকে হত্যা করা হয়। প্রায় ১০/১৫ জন নারীকে পাক বর্বররা ধর্ষণ করে। তাছাড়া পাক বাহিনী ক্যাম্প নিয়েও অনেক লোকের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়।

আবদুর রব, মেজর জেনারেল অবঃ
গণপরিষদ সদস্য, ( সাবেক এম,পি,এ) সিলেট
৩১ অক্টোবর, ১৯৭২।


অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী

 ১৯৬৫ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর। বঙ্গবন্ধু এভেনিউ (তদানীন্তন জিন্নাহ এভেনিউ)-এর আলফা ইনসিওরেন্স অফিসের দোতলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের খাস কামরায় বসে আছি। আরো আছেন রাজশাহীর জনাব কামারুজ্জামান এম, এন, এ সাহেব এবং বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ কর্মী। মধ্যমণি বঙ্গবন্ধু নিজে। আলোচ্য বিষয় দলীয় রাজনীতি থেকে শুরু করে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা। হালকা পরিবেশ। বেলা তখন প্রায় ১০টা। টেলিফোন বেজে উঠলে শেখ সাহেব ধরলেন। তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি অত্যন্ত উত্তেজিতভাবে আলাপ করছেন। প্রায় ২/৩ মিনিট পরে ফোন ছেড়ে দিয়ে বললেন, এপিপি থেকে ফোন এসেছিল। ভারত