পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড

দলিল প্রসঙ্গঃ পটভূমি-১

 ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধ; দলিলপত্র গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে ১৯০৫ থেকে ১৯৫৮ সালের সময়সীমার অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনের দলিলপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

 ১৯০৫ সালে বংগভংগ সংক্রান্ত সরকারী ঘোষণা এই খণ্ডে প্রথম দলিলরূপে স্থান পেয়েছে। এরপর সন্নিবেশিত হয়েছে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের পাকিস্তান প্রস্তাব সম্পর্কিত দলিল। তৃতীয় দলিলটি হলো শেরেবাংলা কর্তৃক লিয়াকত আলী খানকে লিখিত পত্র। এই পত্রে বংগীয় মুসলিম লীগ নেতৃত্বের সংগে কেন্দ্রীয় মুসলিম লীগ নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের চিত্র ফুটে উঠে।

 এর মধ্যে সন্নিবেশিত হয়েছে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ কর্তৃক ১৯৪০ সালে গৃহীত পাকিস্তান প্রস্তাব থেকে শুরু করে ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগ ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত নির্বাচিত দলিলপত্র (পৃঃ ২ থেকে ৪৬ পর্যন্ত)। এতে একদিকে বগীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগ নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের চিত্র আছে, শেরেবাংলা কর্তৃক লিয়াকত আলী খানকে লিখিত পত্রে তা স্পষ্টরূপ লাভ করেছে; অন্যদিকে আছে বৃটিশ সরকার কর্তৃক উত্থাপিত কিছু প্রস্তাব এবং তাঁদের প্রদত্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আদেশের দলিল। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্ঠা সংক্রান্ত দলিলপত্রও এই অংশে সন্নিবেশিত হয়েছে (পৃঃ ২২-৩৫)।

 ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ সালের যেসব দলিল এই সংগ্রহের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তাতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব বাংলার জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের পরিচয় পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রভাষা বিতর্ক (পৃঃ ৪৯, ৫৪, ৬৬-৭৮), মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বিভিন্ন ভাষণ (পৃঃ ৭৫-৯৩), পূর্ব বাংলার মানুষের অধিকারের পক্ষে মাওলানা ভাসানীর একমাত্র সংসদীয় বক্তৃতা (পৃঃ ৭৪) এবং গণতান্ত্রিক যুবলীগ (পৃঃ ৯৪) ও পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিরোধী ভাবধারার রাজনৈতিক তৎপরতার দলিল (পৃঃ ১১৭-১৬৫)।

 ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত যেসব রাজনৈতিক ঘটনা বা ধারা-উপধারা পরিলক্ষিত হয় তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে পৃষ্ঠা ১৩৪ থেকে ২২৭ পর্যন্ত। এই অংশে যেমন এসেছে পাকিস্তান গণপরিষদের অবজেকটিভ রেজুলিউশান (পৃঃ ১৩৭), মৌলিক অধিকার কমিটি রিপোর্ট (পৃঃ ১৫৬ থেকে ১৫৭), মূলনীতি সংক্রান্ত ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় মহাসম্মেলন (পৃঃ ১৬০ থেকে ১৬৯)- তেমনি সংযোজিত হয়েছে হাজং বিদ্রোহ (পৃঃ ১৪৪ থেকে ১৪৫), নাচোল বিদ্রোহ (পৃঃ ১৫১), ১৯৬০ সালের দাংগাবিরোধী বক্তব্য (পৃঃ ১৫৩) সংক্রান্ত দলিল।

 ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন সংক্রান্ত বিভিন্ন দলিলের মধ্যে রয়েছে নাজিমুদ্দিনের বক্তৃতা (পৃঃ ২২৮), তৎকালে প্রকাশিত ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপঞ্জী (পৃঃ ২৩০ থেকে ২৩৬), বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া (পৃঃ ২৩৭ থেকে ২৩৯) এবং প্রধানমন্ত্রী নূরুল আমিনের বক্তব্য। গণপরিষদে বাংলা ভাষা সংক্রান্ত প্রস্তাব (পৃঃ ২৪৬ থেকে ২৫৯) এবং সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের দলিল দেওয়া হয়েছে ২৬০ থেকে ২৬৪ পৃষ্ঠায়।

 ২১শে ফেব্রুয়ারীতে ছাত্র-জনতার উপর গুলিবর্ষণ সম্পর্কে তদন্তের জন্য প্রতিষ্ঠিত এলিস কমিশন রিপোর্টটিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে (পৃঃ ২৬৯ থেকে ৩০১)। সংযোজনী অংশে তৎকালীন পত্রিকায় প্রকাশিত ঘটনার আরও কিছু বিবরণ এবং রাজনৈতিক দলের প্রচারপত্র দেওয়া হয়েছে।

 ১৯৫৩ সালে যুক্তফ্রণ্ট গঠন (পৃঃ ৩৭১), ২১ দফা কর্মসূচী (পৃঃ ৩৭২), ১৯৫৪ সালের নির্বাচন ও অন্যান্য বিষয়ের দলিল রয়েছে ৩৭১ থেকে ৩৮৮ পৃষ্ঠায়। ৯২-ক ধারার মাধ্যমে যুক্তফ্রণ্ট মন্ত্রিসভা বাতিলের দলিল রয়েছে পৃঃ ৪০৩ থেকে ৪০৬ পর্যন্ত। ১৯৫৪ সালে গণপরিষদ বাতিল হবার (পৃঃ ৪০৭) পর থেকে ১৯৫৮ সালে