পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৬১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৫৯৪
শিরোনাম সূত্র তারিখ
কাগমারী সম্মেলনে আন্তর্জাতিক রাজনীতির উপর উপস্তাপিত মওলানা ভাসানীর বক্তব্য দৈনিক সংবাদ ৬ই ও ৮ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৫৭

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতি পাকিস্থানের জনগণের প্রকৃত মুক্ত ও শাস্তির প্রস্তাব করিবে বিশ্বশাস্তির পরিপন্থী যে-কোন প্রকার যুদ্ধজোট পরিত্যাগ ও যুদ্ধচুক্তি বাতিলের দাবী

(সংবাদের বিশেষ প্রতিনিধি)

 কাগমারী (টাংগাইল), ৫ই ফেব্রুয়ারীঃ- মওলানা আবদূল হামিদ খান ভাসানী অদ্য সন্ধ্যায় এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, “আমি কোন প্রকার যুদ্ধাজোটে বিশ্বাস করিনা। বিশ্ব শাস্তির পরিপন্থী যে-কোন প্রকার যুদ্ধজোট মানব সভ্যতা ও মুক্তির পথে বাধাস্বরূপ”।

 তিনি ঘোষণা করেন, “যত কঠিন বাধাই আসুক না কেন আমি পাকিস্তানের জনগণের ভবিষ্যৎ কল্যাণের জন্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতির জন্য সংগ্রাম করে যাব। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এই শক্তিই পাকিস্তানের জনগণের প্রকৃত মুক্তি ও শান্তির পথ প্রশস্ত করিবে"।

 এখানে উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৫৬ সালের ২০শে মে আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে সর্বপ্রকার যুদ্ধজোটের বিরোধিতা করা হইয়াছিল এবং বাগদাদ, সিয়াটো ইত্যাদি যুদ্ধ-চুক্তির বাতিল দাবি করা হইয়াছিল।

‘সংবাদ’ ৮ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৫৭

৭ই ফেব্রুয়ারী আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অধিবেশনে মওলানা ভাসানীঃ

 দীর্ঘ নয় বৎসর ধরে ক্রমাগত সংগ্রাম করার পর এই সর্বপ্রথম আওয়ামী লীগ কেন্দ্র ও পূর্ণ পাকিস্তানে ক্ষমতা পেলো। এ-ক্ষমতা নিরংকুশ নয়, অন্যান্য পার্টির সহযোগিতা নিতে হয়েছে এ ক্ষমতা পেতে, তবু অনেকের মনে হতে পারে, আমরা বিরাট জয়লাভ করেছি, মন্ত্রীরা দেশ শাসন করুক, আমরা বাড়ীতে বিশ্রাম নেই।

 যদি কারও ধারণা হয়ে থাকে তবে তা সম্পূর্ণ ভূল। এ ভূল যত শিগগির ভাংগে ততই মঙ্গল। আপনারা মুসলিম গীগের ইতিহাস বিস্মৃত হবেন না। একদা মুসলিম লীগ ছিল পাক-ভারতের মুসলমানের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। পাকিস্তান কায়েম হবার পর তার ক্ষমতা ও মান-মর্যাদা আর ও বৃদ্ধি পায়। বস্তুত ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট তারিখে পাকিস্তান কায়েম হবার সময় পাকিস্তানে অন্য রাজনৈতিক দলের অস্তিত্বই ছিল না। আমি নিজে বটেই, আজ যারা এখানে সমবেত হয়েছেন তাদেরও অধিকাংশ মুসলিম লীগের সভ্য ছিলেন। জনসাধারণের অগাধ বিশ্বাস ছিল তখন মুসলিম লীগের উপর। পাকিস্তানকে শক্তিশালী, সুন্দর ও দূর্নীতি- কালোবাজারী প্রভৃতি সর্বপ্রকার কলুষ থেকে মুক্তি করার অপরিসীম আগ্রহ ও কর্মপন্থা সকল-