পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৭২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৭০১

 ব্যাংক এবং পোষ্ট অফিস গত কয়েক দিন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকিবার ফলে সেখানে গতকল্য অধিক জনতার ভিড় পরিলক্ষিত হয়।

বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দানের প্রশ্ন গণপরিষদের আগামী অধিবেশনে আলোচনা-

জনাব নূর আহমদ কর্তৃক প্রস্তাব উত্থাপনের নোটিশ দান'

 চট্টগ্রাম, ২৬শে ফেব্রুয়ারী- আগামী ২০শে মার্চ পাকিস্তান গণপরিষদের যে অধিবেশন হইবে, জনাব নূর আহমদ তাহাতে উর্দুর সহিত বাংলাকেও পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বলিয়া গ্রহণের জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করিবেন।

 জনাব নূর আহমদ ইতিমধ্যেই পাকিস্তান গণপরিষদের সভাপতির নিকট এ সম্পর্কে একটি নোটিশও পেশ করিয়াছেন।

লাহোরস্থ পূর্ব পাক ছাত্রদের প্রস্তাব

 লাহোর, ২৫ শে ফেব্রুয়ারী। গত শনিবার লাহোরের উইং হলে জনাব মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত লাহোরস্থ পূর্ব পাকিস্তানী ছাত্রদের এক সভায় ঢাকার সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ ও ছাত্রদের উপর গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা করা হয়।

 সভায় শহীদ দেশপ্রেমিক যুবকদের রুহের মাগফেরাত ও তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের এবং পুলিশের ও সশস্ত্র বাহিনীর আক্রমণে আহতদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।  সভায় বেসরকারী সদস্যদের দ্বারা গঠিত তদন্ত কমিশন কর্তৃক ঢাকার এই মর্মান্তিক ঘটনার তদন্ত এবং হত্যার জন্য দায়ী কর্মচারীদিগকে অনতিবিলম্বে স্থায়ীভাবে পদচ্যুতি ও বিচার দাবী করা হয়।

 সভায় পাকিস্তান গণপরিষদকে বাংলা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার অনুরাধ জানান হইয়াছে।

পুলিশ জুলুমের নিন্দা

ঢাকার মহিলাদের সভায় প্রস্তাব গ্রহণ

 ঢাকার নিরীহ ছাত্র ও জনসাধারণের উপর পুলিশের গুলি সম্পর্কে প্রতিবাদে ১২ নং অভয় দাস লেনে মহিলাদের এক বিরাট সভা হয়। সভার বিশেষত্ব ছিল এই যে, শহরে রিক্সা ও ঘোড়ার গাড়ী বন্ধ থাকা সত্ত্বেও বহুদুর হইতে পায়ে হাঁটিয়া বৃদ্ধা ও বয়সী মহিলারা পর্যন্ত এই সভায় যোগদান করেন।

 সভায় গৃহীত একটি প্রস্তাবে ২১ শে ফেব্রুয়ারী ও পরবর্তী দুইদিনের ছাত্র ও জনসাধারণের উপর পুলিশ ও মিলিটারী ‘নিষ্ঠুর’ গুলিবর্ষণ, লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস বর্ষণের তীব্র নিন্দা করা হয় এবং হাসপাতালে আহতদের দ্রুত নিরাময় কামনা করা হয়।

 সভায় ঢাকার হত্যাকাণ্ডের তদমেত্মর পর দোষী কর্মচারীদের প্রকাশ্য বিচার ও উপযুক্ত শাস্তি দাবী করা হয়।

 শহরে অকারণে ১৪৪ ধারা জারী করার তীব্র নিন্দা করিয়া সভায় প্রস্তাব গৃহীত হয়।