পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৭২৬

পল্লী উন্নয়ন কার্যসূচী

 এতদুদ্দেশ্যে বাজেটে ৯২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে।

 পল্লী উন্নয়ন কার্যসূচী ১৯৫৫-৫৬ সালে বিশেষ কার্যকরী করা হয় এবং বর্তমানে উহা সমেত্মাষজনকভাবে অগ্রসর হইতেছে। তেজগাঁও, দৌলতপুর ও গাইবান্ধার অবস্থিত পল্লী উন্নয়ন শিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষাপ্রাপ্ত তিনদল কর্মী তেজগাঁও, দৌলতপুর, ফুলতলা ও গাইবান্ধা থানাসমূহে তিনটি বিভিন্ন স্থানে উন্নয়ন কার্যে নিযুক্ত আছেন। তাহারা সমেত্মাষজনকভাবে কার্য করিতেছেন। যে দুই দল ট্রেনিংপ্রাপ্ত কর্মী এই বৎসর পাশ করিয়াছেন, তাঁহাদিগকে নূতন উন্নয়ন এলাকায় নিযুক্ত করা হইয়াছে। ১৫ জন মহিলার একটি দলও তেজগাঁও প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাপ্রাপ্ত হইয়াছিলেন। তাঁহাদিগকে বর্তমানে তিনটি উন্নয়ন এলাকায় নিযুক্ত করা হইয়াছে।

 যাহাতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান বর্তমানের ব্যবস্থা মাফিক ৬০-এর পরিবর্তে ১২০ জন কর্মীকে শিক্ষা দিতে পারে; সেই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানসমূহের ট্রেনিং ব্যবস্থার সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত করা হইয়াছে। আলোচ্য বৎসরে আরও দুইটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন কথাও চিন্তা করা হইতেছে। উহার উদ্দেশ্য অল্প সময়ের মধ্যে অধিকসংখ্যক কর্মী তৈয়ার করাযাহাতে যত শীঘ্র সম্ভব সমগ্র প্রদেশে উন্নয়ন কার্য ত্বরান্বিত করা যায়। পূর্ব পাকিস্তান সরকারের কর্মচারীদের ভিতরে পল্লীমুখী মনোভাব সৃষ্টির জন্য এবং যে সমস্ত কর্মচারী সরাসরি পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচী অনুযায়ী নিযুক্ত হইয়াছেন, তাহাদের নূতনভাবে শিক্ষা দিবার নিমিত্ত একটি “একাডেমী” প্রতিষ্ঠার কথাও চিন্তা করা হইতেছে। এই প্রসঙ্গে প্রস্তাব করা হইয়াছে যে সিভিল সার্ভিস কর্মচারীদিগকে এই “একাডেমীতে” কিছুকাল শিক্ষালাভ করিতে হইবে যাহাতে তাঁহারা এই প্রদেশে অধিকতর দায়িত্বপূর্ণ চাকুরী গ্রহণ করিবার আগে এই কর্মসূচী সম্পর্কে একটি মোটামুটি ধারণা লাভ করিতে পারেন। আশা করা যায়, এই পরিকল্পনার সাহায্যে একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের কার্য ত্বরান্বিত হইবে।

 উপসংহারে সকলের সহযোগিতা কামনা করিয়া আমি বলিতে চাই প্রদেশের শাসন কর্তৃত্ব সবেমাত্র আমাদের হাতে আসিয়াছে। সৌভাগ্যের বিষয় কেন্দ্রেও আমাদের সুযোগ্য নেতা জনাব শহীদ সোহরাওয়ার্দী এক কোয়ালিশন মন্ত্রীসভা গঠন করিতে সমর্থ হইয়াছেন। বন্যা ও খাদ্য সমস্যায় বিপন্ন দেশবাসীর খেদমত পূর্ণভাবে করা প্রকৃতই সুকঠোর কর্তব্য। আশা করি, পরিষদের মাননীয় সদস্যবর্গ ও দেশবাসীর সহযোগিতায় এই কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করিয়া আমরা ক্রমে ক্রমে দেশকে প্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে আগাইয়া লইয়া যাইতে সক্ষম হইব।

পাকিস্তান জিন্দাবাদ