পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

372 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড চান মিয়া যাকে লোকে একসময় সমীহ করে কর্তা বলতো, পাক জঙ্গী চক্রের সেই বিশ্বস্ত কর্তা আজ নেই। তার বিশাল সমস্ত কুকীর্তির সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ঐশ্বর্য আর আসবাবপত্র গড়ে উঠেছিলো বাড়ীটিতে, যে ঐশ্বর্যের পরতে পরতে মানুষের রক্ত, ভারী ভারী গদিজোড়া আসন, যাতে গা রাখিলে আবেশে চোখ আপনি বুজে আসে-আলমারী ভর্তি পোষাক-অগণিত ট্রাঙ্ক, সুটকেস-প্রতিটি কক্ষের একই সাজ। সবগুলো টেবিলের ওপর বিদেশী ম্যাগাজিন, অবসর বিনোদনের জন্যে বই, যেন সবাই একটুখানি বাইরে গেছে এক্ষণি এসে পড়বে। কিন্তু তারা আর আসবে না। মুক্তিবাহিনীর ক'জন বীর জোয়ান সদর্পে টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে বাড়ীটাতে। কিছু রাত হতেই শোনা গেলো দূর থেকে জয় বাংলা শ্লোগান। একজন শাস্ত্রী মেজরের সামনে এসে স্যালুট জানিয়ে বলল, একদল রাজাকার এসেছে। জানা গেলো, ওরা ধীতপুরে সকালের দিকে আত্মসমর্পণ করেছে। মেজর তাদেরকে নিরস্ত্র করে আনতে বললেন। ৮০টা রাইফেল, ১টা ষ্টেনগান, একখানা এল, এম, জিসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ পাওয়া গেলো ওদের কাছে। মেজর আফসারের কাছে অবশ্য এ ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। মাত্র কদিন আগে তিনি জাগ্রত বাংলা’র প্রতিনিধির কাছে ব্যক্ত করেছিলেন, আর তিন দিন পর আপনারা মুক্ত ভালুকায় বসে রিপোর্ট লিখবেন। মেজর আফসারের এ-দূরদর্শিতাই তাঁর যথার্থ পরিচয়। তাঁর প্রতিটি কথার পিছনে থাকে অভিজ্ঞতা, অভিজ্ঞতার পিছনে কর্মের একটা প্রয়াস। সামরিক পরিস্থিতির সঠিক বিশ্লেষণ ভুলভ্রান্তি হয়তো তাঁর কখনও হয়েছে কিন্তু অদম্য নিষ্ঠা তাঁকে একের পর এক এনে দিয়েছে সাফল্যের বিজয় গৌরব। চারিত্রিক দৃঢ়তায়