পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৫২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

490 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড ১৭০। রংপুরে শান্তি কমিটির সদস্যদের | দৈনিক পাকিস্তান ১২ আগষ্ট, ১৯৭১ বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিনষ্টকারীরা জনগণের শুভাকাঙ্খী নয় -গভর্ণর পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান গতকাল বুধবার বলেন যে, যারা যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ও কলকারখানার ক্ষতিসাধন করে তারা জনগণের শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না । জেনারেল টিক্কা খান রংপুরে শান্তি কমিটির সস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। গভর্নরের সাথে ছিলেন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ডাঃ এ, এম মালিক ও জাতিসংঘের উদ্বাস্তু হাইকমিশনারের প্রতিনিধি মিঃ জন আর কেলি । গভর্নর তার বক্তব্য বিশেষ করে বলেন যে যোগাযোগ ব্যবস্থা না হলে জনগণের কাছে খাদ্যশস্য পৌছাতে অসুবিধা হবে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটালে শিল্পোৎপাদন স্বল্প হবে এবং পরিণামে বেকার হবে কলকরখানার শ্রমিকরা। গভর্নর এসব গণবিরোধী লোকদের আলাদা করার এবং তাদের উপস্থিতির কথা কর্তৃপক্ষকে জানাবার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের নির্মুল এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কাজে সহায়তা করার জন্য শান্তি কমিটি যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি তার প্রশংসা করেন। গভর্নর বলেন যে শান্তি কমিটিগুলো হলো অরাজনৈতিক সংস্থা এগুলো প্রদেশে সর্বত্র শান্তি বজায় রাখার এবং জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজে সহায়তা করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরো বলেন যে রাজাকারেরাও দুস্কৃতিকারীদের হামলার মুখে নিজ নিজ এলাকা রক্ষা এবং সেতু এবং কালভার্ট পাহারা দিয়ে বিশেষ দরকারী দায়িত্ব পালন করছে। ফিরে আসা উদ্বাস্তুদের প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন যে প্রেসিডেন্ট বারংবার বলেছেন যে যোলযোগকালে যেসব প্রকৃত পাকিস্তানী সীমান্ত অতিক্রম করে গিয়েছিল তারা দেশে ফিরে আসলে তাদের স্বাগত জানানো হবে । তাদের জন্য অভ্যর্থনা শিবির খোলা হয়েছে এবং তাদের পুর্নবাসনের উদ্দেশ্যে প্রযোজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। গভর্নর বলেন কিন্তু ভারত তাদের ফিরে আসতে দিচ্ছে না । এই বিষয়টি খোলাসা করে বলতে গিয়ে গভর্নর বলেন আমাদের লোকদের গ্রহণ করার জন্য আমরা অভ্যর্থনা শিবির স্থাপন করেছি। তার তাদের দেশে ফেরা বন্ধ করার জন্য ভারত বসিয়েছে চেকপোস্ট । শুধু তাই নয়, ভারত নিজ এলাকায় জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মোতায়েনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে । কারণ পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা হলে ভারতের আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ হয়ে পড়বে। উদ্বাস্তুরা যাতে বাড়ী ফিরতে না পারে সে জন্য সীমান্তে গোলযোগ সৃষ্টি করাই হলো ভারতের পুনঃ পুনঃ গোলাবর্ষণের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। এ সত্ত্বেও এ পর্যন্ত এক লক্ষ দশ হাজার লোক দেশে ফিরে এসেছে।