পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

615 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড তিনি অবশ্য বলেন, পাকিস্তান কোন রাজনৈতিক মীমাংসা অথব্য অন্য কোন সমাধান পেল কিনা সেটা সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তনের জনগণের নিজস্ব ব্যাপার। নিষ্পত্তির ধরন কি হবে সেটা তারাই ঠিক করবেন। আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান বিভাবে করবো সে ব্যাপারে অন্য কারো উপদেশ আমাদের প্রয়োজন নেই। আমরা অন্য কোন দেশের কলোনী নই অথবা কারো প্রভাবাধীন নই যে আমাদের এ ধরনের উপদেশ মানতে হবে। যাই হোক, ভুট্টো বলেন যে, পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের সময় অন্যান্য কতিপয় দেশের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করতে চান না। আমি এটা বলছি কারণ এ পর্যন্ত তাদের মনোভাব অস্পষ্ট এবং তাদের হস্তক্ষেপের কোন প্রমাণ নেই। আর প্রমাণ এখনো এমন সিদ্ধান্তমূলক নয় যে, এর প্রতি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। যাই হোক আমরা পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি এবং তাদের হস্তক্ষেপের মাত্রা বাড়লে এবং আমরা হস্তক্ষেপে সম্পার্কে নিঃসন্দেহ হলে আমরা অবশ্যই আমাদের জনগণকে আস্থায় আনব এবং পরিস্থিতি আয়ত্বে আনার জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বৈদেশিক হস্তক্ষেপ সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হওয়ার পরই শুধুমাত্র চীন পাকিস্তানকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটা সন্দেহাতীতরুপে প্রমাণিত হয় যে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। চীন প্রধান এশীয় শক্তি এবং পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত কর্তৃক আন্তজাতিক রীতি নীতি ও জাতিসংঘ সনদ নগ্নভাবে লংঘনের প্রতিবাদ করেছে। ভারতীয় হস্তক্ষেপ প্রতিরোধের এই ন্যায্য সংগ্রামের চীনা সমর্থনের জন্য পাকিস্তানী জনগণ চীনের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের অভ্যন্তরীণ অসুবিধা সমূহ দূর করার কাজ বিদেশী রাষ্ট্রগুলো আমাদের হাতে ছেড়ে দিলে ভাল হয়। আমরা গুরুতর সমস্যায় নিপতিত এবং আমরা এর প্রতি অবিভক্ত ও পূর্ণ দৃষ্টি দিতে চাই। জনাব ভুট্টো বর্তমান সংকটের মোকাবিলায় জনগণের ব্যাপক অংশ গ্রহণের দাবী জানান। তিনি বলেন, বৈদেশিক হস্তক্ষেপ রোধের একটি নিশ্চিত পন্থা হলো তার মোকাবিলায় ব্যাপক জনগণের অংশগ্রহণ। তিনি বলেন যে, গঠনমূলক রাজনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ফলপ্রসূভাবে বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়। তিনি জানান যে, ভিত্তিহীন ও মিথ্যে কাহিনী ও গুজব ছড়িয়ে এই পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করা হচ্ছে। জনাব ভুট্টো বলেন যে, জনসাধারণ বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠ দলরুপে পিপলস পার্টিকে নির্বাচিত করেছে। তাই জনগণের প্রতি পিপলস পার্টির সরাসরি ও বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। বর্তমান সংকট অবসানের জন্যে তাদের গঠনমূলক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি বলেন যে, এ ব্যাপারে গত ১লা ও ২রা এপ্রিল রাওয়ালপিণ্ডিতে তিনি প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা বর্তমান সংকট সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করেছেন। জনাব ভুট্টো বলেন, দেশের বর্তমান সংকটজনক পরিস্থিতি অবসানের জন্যে জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণ যে প্রয়োজন সেকথা আমি প্রেসিডেন্টকে বলেছি। জনাব ভুট্টোর ধারণা,