বাংলায় ভ্ৰমণ . "לכל পা চুকাইয় দেন। দাদাপীর এইরূপ ভক্তি দেখিয়া বিশেষ প্রীত হন এবং নির্দেশ দান করেন যে তাহাদের মৃত্যুর পর প্রথম দিন শাহ্ মুরাদের এবং পরদিন তাহার নিজের ফতেহা হইবে। এখনও প্রতি বৎসর পৌষ মাসের ১৯এ শাহ্ মুরাদের এবং ২০এ দাদাপীরের ফতেহা বা মৃত্যু-উৎসব পালিত হয় ; এই সময়ে নগর গ্রামে একটি বড় মেলা হয়। আজিমগঞ্জ জংশন হইতে লোহাপুর ১৮ মাইল দূর। এই স্টেশনের উত্তরে গম্ভীরা নদীর তীরে বারা বা বালানগর নামে একটি গ্রাম আছে। ইহা বাণরাজা, মতান্তরে বালা রাজার রাজধানী ছিল বলিয়া কথিত। আরও কিংবদন্তী আছে যে বারা ও তাহার নিকটবর্তী বাণেশ্বর ও নগর এই তিনটি গ্রাম লইয়া মহাভারতের বণিত বারণাবত নগর ছিল। পাণ্ডবগণ কিছকাল এই অঞ্চলে অজ্ঞাতবাস যাপন করিয়াছিলেন বলিয়। কথিত এবং এই স্থানেই নাকি জতুগৃহ দাহ হয়। স্টেশনের ৪ মাইল দক্ষিণে ভদ্রপুর গ্রাম ইতিহাস-প্রসিদ্ধ মহারাজ নন্দ কুমারের জন্মস্থান। তাহার বসত বাটী ও তাহার খনিত রাণী সাগর ও গুরু সাগর দীঘি এখনও বৰ্ত্তমান। মহীপাল হলছ—ব্যাণ্ডেল জংশন হইতে ১১৭ মাইল। খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর প্রথমভাগে উত্তর রাঢ়ে মহীপাল নামে এক পাল বংশীয় রাজা রাজত্ব করিতেন এবং মহীপাল নগরে তাহার রাজধানী ছিল বলিয়া অনুমিত হয়। ইনি প্রসিদ্ধ পাল বংশীয় রাজা মহীপাল হইতে ভিন্নব্যক্তি ; সম্ভবত: ইনি গোঁড়াধিপতি পালবংশের অপর কোন শাখা-সস্তুত। এই স্থানে মহীপাল নগরের ভগ্নাবশেষ অদ্যাপি বর্তমান। মহীপাল নগর প্রায় ৭/৮ মাইল বিস্তৃত ছিল ; আজিমগঞ্জ নলহাটি শাখার বাড়াল স্টেশন হইতে আরম্ভ করিয়া ভাগীরথী কুলে গয়সাবাদ পর্য্যন্ত মহীপাল নগরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। উক্ত শাখা লাইনে মহীপাল খনিত সাগর দীঘির কথা কিছু আগে বলা হইয়াছে। যে স্থানে রাজার প্রাসাদ ছিল উহাই এখন মহীপাল নামে পরিচিত ; প্রাসাদটি এখন ভগ্নস্তুপ মাত্র ; ইহার মধ্যে দুইটি পুরাতন পুষ্করিণী আছে। ভগ্নস্তুপের নিকট বহু প্রস্তর খণ্ড দৃষ্ট হয়; একটি অস্বাভাবিক প্রস্তর মূৰ্ত্তিকে লোকে রাক্ষসের দেহ বলিয়া থাকে ; ইহার আকৃতি হস্তীর ন্যায়, কিন্তু দুইটি শিংও আছে; অনেকে অনুমান করেন ইহা কোনও বৌদ্ধ মন্দিরের প্রস্তর মুক্তি হইবে। মহীপালের নিকটস্থ একটি প্রাচীন জলাশয় হইতে একটি দ্বাদশ হস্ত বিশিষ্ট বিরাট দণ্ডায়মান পুরুষ দৃত্তি পাওয়া গিয়াছিল ; মূৰ্ত্তিটি এখন কলিকাতার যাদুঘরে রক্ষিত আছে; ইহার দুই পাশে দুইটি দণ্ডায়মান সহচর ও তাঁহাদের পাশে দুইটি স্ত্রীমত্তি বসিয়া আছে। ইহা হিন্দু কি বৌদ্ধমুক্তি তাহা ঠিক নিদিষ্ট হয় নাই । মণিগ্রাম—ব্যাণ্ডেল জংশন হইতে ১২৩ মাইল ; স্টেশনের প্রায় একমাইল উত্তরে চাঁদপাড়া বা একআনা চাদপাড়া গ্রাম। সাগরদীঘি রেল স্টেশন হইতে এই গ্রাম প্রায় ৮ মাইল উত্তর-পূবেৰ্ব অবস্থিত। কথিত আছে, গৌড়েশ্বর হুসেন শাহ বাল্য কালে এই গ্রামের জমিদার মুবুদ্ধি রায়ের অধীনে কাৰ্য্য করতেন। প্রবাদ, হুসেন তাহার পিতার সহিত আরব হইতে এখানে আসিয়া উপস্থিত হন। কথিত আছে একদিন হুসেন মুবুদ্ধি রায়ের গৰু চরাইতে গিয়া মাঠে খুমাইয়া পড়িলে দুইটি সাপ আসিয়া রৌদ্র হইতে তাহার মাথা ঢাকিয়া রাখে। সুবুদ্ধি রায় ইহা দেখিয়া তাঁহাকে বলিয়াছিলেন তিনি রাজা হইবেন এবং তখন যেন পুরাতন মনিবন্ধে ভুলিয়া না যান। চাঁদপাড়ায় থাকা কালীন গ্রামের কার্জীর কন্যার সহিত হুসেনের বিবাহ হয়। কাজীর বাড়ীতে তিনি লেখা পড়া শিখেন, এবং কাজীর গৌড় দরবারে যাতায়াত থাকায় তাহার সাহায্যে হুসেন রাজ
পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৬২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikisource/bn/thumb/c/c4/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%AD%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A6%A3_-%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1.pdf/page162-925px-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%AD%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A6%A3_-%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1.pdf.jpg)