পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূবৰ্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ &○ কিরীটের "ডাক ” এই স্থানে পতিত হয়। "ডাক ” স্থানীয় শব্দ ; কারুকার্য্য প্রতিফলিত করিবার জন্য জড়োয়া গহনার নীচে " ডাক " বসানো হইয়া থাকে। " ডাক ’ পতিত হওয়ায় স্থানটি একটি উপপীঠ বলিয়া গণ্য হয় এবং ঢাকা নাম প্রাপ্ত হয় এবং দেবী ঢাকেশ্বরী নামে পরিচিত হন। অন্যমতে ঢাকেশ্বরী দেবী “ ঢাক৷ ” বা গুপ্ত ছিলেন ; মহারাজ বল্লাল সেন তাহাকে আবিষ্কার করিয়া প্রতিষ্ঠিত করেন এবং পূবেৰ্ব ঢাকা ’ ছিলেন বলিয় তাহার নাম ঢাকেশ্বরী হয়। কেহ কেহ বলেন ১৬০৮ খৃষ্টাব্দে মুবাদার ইসলাম খাঁ যখন রাজমহল হইতে এই স্থানে রাজধানী লইয়া আসেন তখন তাহার শিবির হইতে ঢাক বাজাইয়া যত দূর পর্য্যন্ত তাহা শোনা গিয়াছিল তত দূর রাজধানীর সীমা নিদিষ্ট হইয়াছিল এবং এই জন্য শহরের নাম হয় ঢাকা । কেহ বা বলেন ঢাক নামক গাছ হইতে ঢাকা নাম হইয়াছে; আজকাল কিন্তু ঢাক গাছ ঢাকা শহরে বিশেষ দৃষ্ট হয় না। বৰ্ত্তমান ঢাকা নগরী দৈর্ঘ্যে ৪ মাইল ও প্রস্থে ১ হইতে ২ মাইল। ইহা বাংলার দ্বিতীয় শহর । ঢাকার দ্রষ্টব্য স্থান গুলির মধ্যে প্রথমেই বুড়ীগঙ্গা তীরে বাক্ল্যাণ্ড বধের উল্লেখ করিতে হয়। ইহার দৃশ্য সত্যই সুন্দর বিশেষত: বর্ষাকালে যখন নদী কানায় কানায় ভরিয়া উঠে। ইহার জন্যই ঢাকাকে কেহ কেহ প্রাচ্যের ভিনি বলিয়া থাকেন। বাধের পশ্চিম প্রান্তে ঢাকার নবাবদের বৃহৎ ও ক্ষুদৃশ্য আধুনিক প্রাসাদ আহসান মঞ্জিল অবস্থিত। বাঁধের পূবর্ব প্রান্তেও সুন্দর আটালিকা দেখিতে পাওয়া যায়। এই বাধের উপরই ঢাকার সুপ্রসিদ্ধ নর্থব্রুক হল অবস্থিত ; নিকটেই বাধের উপর একটি পুরাতন বড় কামান রক্ষিত আছে। বাধের ধারে ধারে সুন্দর সুন্দর বাসভবন প্রভৃতি অবস্থিত ; ইহাদের মধ্যে সুদৃশ্য প্রাচীন ইমারত বড় কাটরা ও ছোট কাটরা উল্লেখযোগ্য। সুপ্রসিদ্ধ শাহ শুজা বড় কাটুর নামক সরাইখানাট নির্মাণ করেন। বড় কাটুরার নিকটেই শায়েস্তা খ৷ নিৰ্ম্মিত সরাইখানা ছোট কাটুরার মধ্যে বিবি চম্পার সমাধি দৃষ্ট হয় ; তিনি কে ছিলেন জানা যায় নাই ; তাহার নাম হইতে স্থানটি চাপাতলি নাম প্রাপ্ত হইয়াছে। বড় কাটরার ঠিক্‌ সম্মুখে বুড়ীগঙ্গার অপর পারে জিঞ্জিরায় বাংলার সুবাদার ইব্রাহিম খাঁ কর্তৃক ১৬২০ খৃষ্টাব্দে নিৰ্ম্মিত প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ দষ্ট হয়। এই জিঞ্জিরার প্রাসাদেই পলাশীর যুদ্ধের পর আলিবর্দী দুহিতা ঘেসেটি ও আমিনা বেগম હ সিরাজউদ্দৌলার বেগম ও শিশুকন্যা বন্দিনী ছিলেন। মীরজাফরের পুত্র মীরণ মুর্শিদাবাদে লইয়া যাইবার ছল করিয়া ধলেশ্বরী নদীতে নৌকা ডুবাইয়া ইহাদের হত্যা করেন বলিয়া কথিত ; মৃত্যুকালে ঘেসেটি ও আমিন বেগম মীরণকে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর অভিশাপ দেন। মীরণ বজাখাতেই প্রাণত্যাগ করিয়াছিলেন বলিয়া কথিত । বুড়ীগঙ্গার তীর হইতে প্রত্যহ গহেনার নৌকা মানিকগঞ্জ, ধামরাই, বহর, তালতলা, লৌহজঙ্গ, শ্রীনগর, কলাকোপা প্রভৃতি স্থানে যাতায়াত করে। বাকল্যাণ্ডু বাধ ছাড়িয়া একটি রাস্ত নদীর সমান্তরালে পশ্চিমে পটুয়াটুলি, ইসলামপুর, বাবুবাজার, মুঘলটুলি, চক বাজার হইয়। শহরের প্রান্তে লালবাগ পর্য্যন্ত গিয়াছে। আর একটি প্রধান রাস্ত বাকল্যাও বাধ হইতে উত্তরে কাছারি প্রভৃতি হইয়া রেলওয়ে স্টেশনের দিকে গিয়াছে। ইহা নবাবপুর রাস্ত নামে পরিচিত ৮ নবাবপুর, উয়ারি, তাঁতিবাজার, বাংলা_বাজার, সূত্রপুর, লক্ষ্মী বাজার, শাখার বাজার, আরমানিটােলা, কায়েতটুলি, রমনা প্রভৃতি মহাল্লার নাম ঢাকার বাহিৰেও পরিচিত Zনবাবপুর বাস্তার নিকটে মানোয়ার স্বীর বাজার স্বপ্রসিদ্ধ ঈশা খ৷ মসনদ-ই-আলির প্রপৌত্রের নাম বহন করিতেছে। চক বাজারের বড় চক-মসজিদটি ১৬৭৬ খৃষ্টাব্দে পাৰে৷ ই কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হয়; এই মসজিদে চওড়া ও বড় কিন্তু অনুচ্চ খিলানগুলি আওরঙ্গাবাদ ও আহমদ নগরের