পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So 8 বাংলায় ভ্ৰমণ তিন দিকে ইছামতী নদী প্রবাহিতা বলিয়া স্থানটি বেশ সুরক্ষিত। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এখানে একটি নগর ও বহু দেবালয় প্রতিষ্ঠা করিয়া উহার নাম রাখেন শিবনিবাস। র্তাহার সময়ে এখানে ১০৮টি শিবমন্দির ছিল, কিন্তু এখন তাহার তিনটি মাত্র অবশিষ্ট্র আছে। ১৮২৪ খুষ্টাব্দে বিশপ হিবর শিবনিবাসে আগমন করিয়াছিলেন। তিনি তাহার লিখিত বৃত্তান্তে এই স্থানের ভূয়সী প্রশংসা করিয়াছেন। তিনি এখানে চারিটি অতি সুন্দর মন্দির দেখিয়াছিলেন এবং এখানকার পুরাতন রাজ বাড়ীর প্রবেশ দ্বারকে “গথিক” স্থাপত্যের মুন্দর নিদর্শন বলিয়াছেন। র্তাগর মতে ইহার গঠন প্রণালী মস্কে নগরীর প্রসিদ্ধ ব্রেমলিন প্রাসাদের পবিত্র ফটকের ন্যায়, কিন্তু দেখিতে আরও অনেক সুন্দর। কৃষ্ণচন্দ্রের সময়ে শিবনিবাস কাশীতুল্য বিবেচিত হইত। সেই জন্য একটি প্রবাদ বাক্য প্রচলিত হইয়াছিল--- শিবনিবাস তুল্য কাশী ধন্য নদী কঙ্কনা । উপরে বাজে দেব ঘড়ি নীচে বাজে ঠণ্ঠন ৷ বৰ্ত্তমানে এখানে বুড়শিবের মন্দির ও রামচন্দ্রের মন্দির দ্রষ্টব্য বস্তু। বুড়াশিব নামে পরিচিত শিবলিঙ্গটি প্রায় ৯ ফুট উচ্চ। শিবরাত্রি, চড়ক ও ভৈমী একাদশীর সময় এখানে এখনও বহু লোকের সমাগম হইয়া থাকে। মাজদিয়া স্টেশনের নিকটে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে মাথাভাঙ্গ নদী চুণী ও ইছামতী ধারায় বিভক্ত হইয়াছে ; চূর্ণ প্রধান লাইনের পশ্চিম দিয়া দক্ষিণে চলিয়া গিয়াছে। ইছামতী মাজদিয়া স্টেশনের দক্ষিণে প্রধান লাইনের নীচে দিয়া গিয়া নদীয়া, যশোহর, চব্বিশ পরগণা ও খুলনা জেলা দিয়া প্রবাহিত হইয়াছে। ইহা একটি পুরাতন নদী ; গঙ্গার প্রধান ধারা যখন ভাগীরথী পথে বহিত তখন ইহার উৎপত্তি হয় বলিয়া অনুমিত হয়। ইহার কূলে স্থানে স্থানে পর্তুগীজদিগের কুঠ স্থাপিত হইয়াছিল। পূৰ্ব্বে ইহ ঢাকার পূর্বদিকে ব্ৰহ্মপুত্রে গিয়া পড়িত এবং এই সঙ্গমস্থলে বাংলার প্রাচীন রাজধানী রামপাল অবস্থিত ছিল । (পাবনা দ্রষ্টব্য)। স্টেশনের দেড় মাইল দক্ষিণে ভজনঘাট গ্রামে “রাষ্ট উন্মাদিনী” এবং “স্বপ্ন বিলাস” “বিচিত্র বিলাস” প্রভৃতি গ্রন্থপ্রণেতা কবি কৃষ্ণকমল গোস্বামী মহাশয় জন্মগ্রহণ করেন। ইনি বাল্যে পিতার সহিত বৃন্দাবনে থাকিয়া পড়াশুনা আরম্ভ করেন এবং নবদ্বীপে আসিয়া পাঠ সমাপ্ত করেন। কবি শেষ বয়সে ঢাকায় বাস করিতেন । ইহার রচিত যাত্রার পালা পূর্ববঙ্গে অত্যন্ত লোকপ্রিয় হইয়াছিল। অনেকের মতে বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাসের পরে ইহার মত উচ্চদরের পদকৰ্ত্ত আর দৃষ্ট হয় না। ১৮৮৮ খৃষ্টাব্দে চুচুড়ায় ইনি পরলোক গমন করেন। মাজদিয়া স্টেশন হইতে এক মাইল পশ্চিমে কৃষ্ণগঞ্জ গ্রাম ; তাহারপাশেই ক্ষুদ্র গ্রাম নাথপুরে সুপ্রসিদ্ধ কর্ণেল সুরেশ বিশ্বাসের পৈতৃক বাসস্থান। ১৮৬১ খৃষ্টাব্দে রাণাঘাটে মাতুলালয়ে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। খৃষ্টধৰ্ম্ম গ্রহণ করায় গৃহ হইতে বহিস্কৃত হইয়া ১৭ বৎসর বয়সে খালাসির কার্য্য লইয়া তিনি বিলাত গমন করেন, তথায় নানা কষ্টের পত্ৰ একটি সার্কাসদলে যোগ দিয়া শেষে দক্ষিণ আমেরিকায় ব্ৰেজিলে উপস্থিত হন। সেখানে