পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ >>役 ...শ্চিম দিকে হটিতে থাকে। ইছামতী পাবনার ঠিক নীচেষ্ট পদ্মা হইতে উঠিয়া জেলার চক্ষণ দিকে বহিয়া বেরার নিকট হুরাসাগর নদীতে পড়িয়াছে। ইছামতী নামে নদী মদীয়া, যশোহর, খুলনা, চব্বিশ পরগণা, ঢাকা প্রভৃতি জেলায় দৃষ্ট হয়। সম্ভবতঃ পূর্বে এগুলি একই নদী ছিল । পাবনা নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে কেহ কেহ বলেন পূৰ্ব্বকালে এখানে “পবন" নামে একজন দস্থ্যর আডড ছিল, তাহার নাম হইতেই পাবনা নাম হইয়াছে । আবার কাহারও কাহারও মতে গঙ্গার পাবনী নামক পুৰ্ব্বগামিনী ধারা হইতেই “পাবনা” নাম হইয়াছে। পাবনা ছোট শহর। এখানে বহু পরিমাণে গেঞ্জী মোজা প্রভৃতি প্রস্তুত হইয়া থাকে। এখানে এড়ওয়ার্ড কলেজ নামক একটি প্রথম শ্রেণীর কলেজ, একটি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় ও একটি টেকনিক্যাল স্কুল আছে। এখানকার প্রাচীন কীৰ্ত্তির মধ্যে জোড়-বাংলা উল্লেখযোগ্য। ইহা শহরের উত্তর-পূর্ব কোণে কালাচাঁদপাড়ায় অবস্থিত। এই মন্দিরের উপরিভাগ অৰ্দ্ধ চন্দ্রাকৃতি । ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লাল প্রস্তর দিয়া মন্দিরটি নিৰ্ম্মিত । ইহার প্রাচীরগাত্রে বহু দেবদেবীর চিত্র উৎকীর্ণ আছে। ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দের প্রবল ভূমিকম্পের ফলে এই মন্দিরের পাদপীঠ অনেকটা মৃত্তিকাগর্ভে বসিয়া গিয়াছে। কথিত আছে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ব্রজমোহন ক্রোড়ী (ক্রোড় সংখ্যক দাম রাজস্ব আদায়কারী) নামক জনৈক ব্যক্তি কর্তৃক ইহা নিৰ্ম্মিত হয়। পাবনা শহরের অনতিদূরে হিমাইতপুর গ্রামে “ সংসঙ্গ” নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। এখানে ধৰ্ম্ম শিক্ষার সহিত হাতে কলমে বৈজ্ঞানিক শিক্ষা ও কুটার শিল্প প্রভৃতি শিক্ষা দেওয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ঠাকুর অনুকূলের জন্মোৎসব উপলক্ষে এখানে বহু লোকের সমাগম হয়। এখানে একটি অতিথিশালা আছে। পাবনা শহরের ১১ মাইল পূর্বদিকে ততীবন্দের চৌধুরী বংশীয় জমিদারগণ এ অঞ্চলে প্রসিদ্ধ । ঈশ্বরদি জংশন হইতে একটি শাখা লাইন ৫০ মাইল দূরবর্তী সিরাজগঞ্জ ঘাট পৰ্য্যন্ত গিয়াছে । বর্তমানে আসাম বাংলা রেলপথের আশুগঞ্জ ও ভৈরববাজারের মধ্যে মেঘনা নদীর উপর সেতু নিৰ্ম্মিত হওয়ায় সিরাজগঞ্জ ঘাট, জগন্নাথগঞ্জ ঘাট ও ময়মনসিংহ হইয়া অল্প সময়ে কলিকাতা ও চট্টগ্রাম প্রভৃতি স্থানে যাতায়াতের বিশেষ সুবিধা হইয়াছে। এই শাখা পথে চাটমোহর, ভাঙ্গড়, উল্লাপাড়া ও সিরাজগঞ্জ (বাজার ও ঘাট) উল্লেখযোগ্য স্টেশন । - চাটমোহর—ঈশ্বরদি হইতে চাটমোহর ১৬ মাইল দূর। ইহা বড়াল নদীর তীরে অবস্থিত এবং পাবনা জেলার একটি বাণিজ্য-কেন্দ্র। বড়াল রাজশাহী জেলার চারঘাটের নিকটে পদ্মা হইতে উঠিয়া শাহজাদপুরের দক্ষিণে হুরাসাগরে পতিত হইয়াছে। চাটমোহরে একটি প্রাচীন মসজিদ আছে । এই মসজিদের উৎকীর্ণলিপি হইতে জানা যায় যে ১৫৮১ খৃষ্টাব্দে তুই মহম্মদ খাঁ কাকশালের পুত্র সুলতান মাসুম খাঁ কাবুলি কর্তৃক ইহা নিৰ্ম্মিত হয় } এই মসজিদের প্রস্তর গাত্রে বহু হিন্দু দেবদেবীর মৃত্তি খোদিত আছে । তুর্কি জাতির এক শাখা কাকশাল নামে পরিচিত ছিল । উত্তর বঙ্গে বিশেষতঃ দিনাজপুর জেলায় ইহাদেৱ বহু জায়গীর ছিল । নিষ্কর জায়গীর উঠাইয়া লণ্ডয়ায় এবং ইসলাম ধৰ্ম্মের উপর সম্রাট আকবরের তাদৃশ নিষ্ঠা ছিল না মনে করিয়া