পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৰ্ব্ববঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ 2 Σ ή ইতেও বহু পরিমাণ মৎস্ত কলিকাতায় রপ্তানি হয়। ইহা শাহজাদপুরে যাইবার স্টশন। শাহজাদপুর উল্লাপাড়া হইতে ৮ মাইল দক্ষিণে হুরসাগরের তীরে অবস্থিত একটি পুরাতন নগর। এখানে মখদুম শাহ্-দৌলা নামক মুসলমান সাধুর সমাধি আছে। মখদুমশাহ আরব দেশের যমনের রাজপুত্র। কথিত আছে, তিনি পিতার অনুমতি লইয়া ধৰ্ম্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে পূৰ্ব্বাভিমুখে যাত্রা করেন। পাবনা জেলায় শাহজাদপুরের দুই মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে পোতাজিয়ায় পৌছিলে র্তাহার জাহাজ ডাঙ্গায় লাগিয়া যায়। মখদুম শাহু-দৌলা একটি চরে আবাস স্থাপন করেন। মখদুম শাহ দৌলার সহিত র্তাহার ভগিনী, তিনজন ভাগিনেয়, দ্বাদশ জন 'দরবেশ’ এবং বহু সাঙ্গোপাঙ্গ আসিয়াছিলেন। কিংবদন্তী অনুসারে আগন্তুকদিগের সঠিত তৎকালের হিন্দুরাজার বিরোধ উপস্থিত হয় এবং ক্রমে যুদ্ধ বাধে। প্রথম দুইটি যুদ্ধে মথন্তম শাহের দল জয়ী হন ; তৃতীয় যুদ্ধে তাহারা হারিয়া যান এবং শাহজাদা নিহত হন। র্তাহার ভগিনী অপমানের ভয়ে জলে ডুবিয়া প্রাণত্যাগ করেন। এখনও লোকে “সতী বিবির খাল" দেখাইয়া সেই ঘটনা স্মরণ করে। এখানে মখদুম শাহ তাহার ভাগিনেয়ত্রয় এবং সহচর দ্বাদশজন দরবেশের সমাধি বাতীত পরববর্তী কালের আরও কয়েকজন আউলিয়ার সমাধি আছে। শেষোক্তদের মধ্যে শাহ হবিবুল্লার আস্তানায় হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোকই অর্ঘ্য প্রদান করেন এবং শাহ মস্তানের আস্তান হইতে নাকি অন্ধকার রাত্রে মধ্যে মধ্যে এক ঝলক অত্যুজ্জ্বল আলোক আকাশের দিকে উঠিতে দেখা যায়। এখনে শাহজাদা মখদুম শাহের প্রতিষ্ঠিত একটি সুন্দর পুরাতন মসজিদ আছে। মখদুমশাহদোলা আরবদেশের রাজপুত্র বা শাহজাদা ছিলেন বলিয়া স্থানটির নাম শাহজাদপুর হইয়াছে। মসজিদটি ইষ্টক নিৰ্ম্মিত এবং ৫২ ফুট লম্বা ও ৩১ ফুট চওড়া, ইহার ভিতরে ২৮টি কালে পাথরের থাম আছে। ইহার মধ্যে একটি থামের রং অপরগুলি হইতে কিছু বিভিন্ন। এঅঞ্চলে লোকের বিশ্বাস এই থামটিকে জড়াইয়া ধরিলে সন্তানহীন নারী সন্তান লাভ করেন। মসজিদ ও কবরগুলির খরচের জন্য ৭১২ বিঘা নিষ্কর জমি আছে। বৈশাখ মাসে এখানে একটি বড় মেলা হয়। হিন্দুমুসলমান নির্বিশেষে বহু লোক ইহাতে যোগদান করেন। এই মেলায় টাটু ঘোড়া বিক্রয় হয়। এই মেলায় মুন্দর পুতুল প্রভৃতি লোকশিল্পের নিদর্শনস্বরূপ কিছু কিছু জিনিষ দেখিতে পাওয়া যায়। পোতাজিয়ায় একটি পুরাতন ও ভগ্নপ্রায় নবরত্ন মন্দির আছে। কথিত আছে, যে ইহার চূড়া অত্যন্ত উচ্চ ছিল এবং বহুদূর হইতে লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করিত; ' জনৈক নবাবের আদেশে ইহার উপরের দুইটি তলা নাকি ভাঙ্গিয়া দেওয়া হয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ যখন তাহাদের জমিদারী নিজে দেখাশুনা করিতেন, সে সময়ে তিনি মধ্যে মধ্যে শাহজাদপুরে আসিয়া অবস্থান করিতেন। তাহার “ছিন্নপত্রের” কয়েকটি পত্র এই স্থান হইতে লেখা । শাহজাদপুর হইতে ৬৭ মাইল দক্ষিণে ইছামতী বড়াল ও হুরসাগরের সঙ্গমস্থলে মপূর থানার অন্তর্গত পাবনার প্রসিদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র বেরা অবস্থিত। ইহা পাটের একটি