পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Sbr বাংলায় ভ্রমণ প্রসিদ্ধ গঞ্জ । ইহার কিছু নীচে হুরাসাগর যমুনা বা ব্ৰহ্মপুত্রের সহিত মিলিত হইয়াছে। হুরাসাগরের উৎসও যমুনা হইতে, সিরাজগঞ্জের কিছু নীচে । চাটমোহর, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুরের নিকটস্থ বিল হইতে শীতকালে ছোট ছোট এক রকম মুক্ত পাওয়া যায়। অল্প দামে কলিকাতা ও বগুড়ায় ইহা বিক্রয় হয়। সিরাজগঞ্জ বাজার -ঈশ্বরদি হইতে ৫০ মাইল ও কলিকাতা হইতে ১৭৫ মাইল দূর । ইহা পাবনা জেলার মহকুমা এবং বাংলাদেশের একটি প্রধান বন্দর। যমুনা বা ব্ৰহ্মপুত্ৰকুলে অবস্থিত ইহা একটি আধুনিক গঞ্জ । সিরাজ আলি নামক একজন জমিদার ইহার পত্তন করেন বলিয়া ইহার নাম হইয়াছে সিরাজগঞ্জ । সিরাজগঞ্জ ঘাট স্টেশন হইতে সটনারযোগে ব্ৰহ্মপুত্র পার হইয়া পূর্ববঙ্গ রেলপথের ঢাকা বিভাগের জগন্নাথগঞ্জ স্টেশন হইতে মাঝারি মাপের রেলপথ ধরিয়া ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম প্রভৃতি স্থানে যাওয়া যায়। সিরাজগঞ্জ গত ৫০ বৎসরের মধ্যে একটি প্রকাণ্ড নগর হইয়া উঠিয়াছে। এক নারায়ণগঞ্জ ব্যতীত বাংলাদেশে এত বড় আভ্যন্তরীন বন্দর এখন আর নাই। অবশ্য কলিকাতা ও চট্টগ্রামের কথা স্বতন্ত্র, কারণ এই দুইস্থানে সমুদ্রগামী জাহাজ আসিয়া থাকে। এখান হইতে প্রতিবৎসর রেল বা স্টীমারযোগে লক্ষ লক্ষ টাকার পাট চালান যায়। যমুনা বা নূতন ব্রহ্মপুত্রের গতি পরিবর্তন হওয়ায় সিরাজগঞ্জ শহরটি অতি দ্রুত ভাঙ্গিয়৷ যাইতেছিল । সম্প্রতি স্থানীয় লোক ও বাংল। সরকারের প্রচেষ্টায় ভাঙ্গনের প্রসার রোধ করা হইয়াছে। ব্রহ্মপুত্রের এই খাতটি নূতন। পূর্বে ইহা গারো পাহাড়ের নীচে দিয়া ময়মনসিংহ জেলার মধ্য দিয়া প্রবাহিত হইয়া ভৈরববাজারের নীচে মেঘনায় পড়িত। এই পুরাতন খাতটি মজিয়া আসিতেছে। পলি পড়িয়া নদীর খাত উচ্চ হইতে থাকিলে ১৭৮৯ খৃষ্টাব্দে তিস্তার প্রসিদ্ধ খাতের পর ব্রহ্মপুত্র পুরাতন খাত ছাড়িয়া রংপুর, বগুড়, ও পাবনা জেলার পূর্বদিক দিয়া যমুনা নদীর খাতে বহিয়া গঙ্গার সহিত যুক্ত হয়। পূৰ্ব্বে তিস্ত দক্ষিণে গঙ্গা বা পদ্মায় পড়িত, কিন্তু বন্যার পরে পূর্বদিকে হটিয়া যমুনা বা ব্ৰহ্মপুত্রের সহিত মিলিত হয়। গঙ্গার ক্রমশঃ পূৰ্ব্বদিকে গমনের ন্যায় ব্রহ্মপুত্র ক্রমশঃ পশ্চিমদিকে আসিতেছে। খুষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইহা চট্টগ্রাম বন্দরের নিকট সমুদ্রে মিলিত হইত। ইহার পর ভৈরববাজারের নীচে দিয়া মেঘনার সহিত মিলিত হইয়া বহিতে থাকে। তাহার পর ঢাকা জেলার মধ্য দিয়া প্রবাহিত হইয় পর পর ধলেশ্বরী ও যমুনার খাত বাছিয়া লইয়াছে। ১৮৭২-৭৩ খৃষ্টাব্দে সিরাজগঞ্জ মহকুমার ইউসুফশাহী পরগণায় জমিদারগণের খাজনা এবং সেস্ প্রভূত বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রজাগণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ও বিদ্রোহী হয়। তাহাদের নেতা ঈশান রায় বিদ্রোহীর রাজা নামে অভিহিত হয় । এই আন্দোলন ক্রমে পাবনা জেলার অন্যত্র এবং পাশ্ববৰ্ত্তী জেলাগুলিতে ছড়াইয়া পড়ে। গভর্ণমেণ্টের মধ্যস্থতায় এবং ১৮৭৩-৭৪ খৃষ্টাব্দের ভিক্ষে এই হাঙ্গামা চাপা পড়িয়া যায়। ইগ হইতেই ১৮৮৫ খৃষ্টাব্দের প্রজাস্বত্ব আইনের সূত্রপাত হয়। গোপালপুর-কলিকাতা হইতে ১৩২ মাইল। এখানে একটি প্রকাও চিনির কল স্থাপিত হইয়াছে। .