পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S ९8 বাংলায় ভ্রমণ এবং পরে কামরূপ, কলিঙ্গ ও মিথিলা অধিকার করেন । এষ্ট প্রশস্তি প্রসিদ্ধ কবি উমাপতি ধর কর্তৃক রচিত এবং শিল্পী চাণক শূলপাণি কর্তৃক উৎকীর্ণ। এই প্রস্তর লিপিতে উল্লিখিত বিজয় সেন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রহ্লামেশ্বর মহাদেবের মন্দির নিকটবৰ্ত্তী তৎপ্রতিষ্ঠিত বৃহৎ হ্রদ পত্নমসর নামক দীঘির তীরে অবস্থিত ছিল বলিয়া অনেকের অনুমান। এই স্থান হইতে উক্ত মন্দিরের প্রবেশদ্বারের “উড় স্বর" বা চৌকাট বলিয়া কথিত ছুইখানি দীর্ঘ প্রস্তর আবিষ্কৃত হইয়াছে। নিকটবৰ্ত্তী পালপুর নামক স্থানে সুদীর্ঘ তুর্গ পরিখার চিহ্ন আজি ৪ দেখিতে পাওয়া যায়। খেতুর হইতে চারি মাইল দূরে মণ্ডয়েল বা মাড়ইল নামক গ্রামে ধ্বংস প্রাপ্ত চারিটি মৃত্তিক স্তৃপ আছে ; উহাদের মধ্যে একটি ৪০ফুট উচ্চ। বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি এই স্থান হইতে বহু প্রাচীন নরমূৰ্ত্তি ও ষোড়শ স্থানীয় জৈন তীর্থঙ্কর শান্তিনাথের প্রস্তর মূৰ্ত্তি আবিষ্কার করিয়াছেন । সম্প্রতি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র এই স্থান হইতে প্রথম জৈন তীর্থঙ্কর ঋষভ দেবের মূৰ্ত্তি প্রাপ্ত হইয়াছেন। অনেকে অনুমান করেন যে এই স্থানের অধিবাসিগণ বহু পূৰ্ব্বে জৈন ধৰ্ম্মাবলম্বী ছিলেন। বর্তমানে এখানকার অধিবাসিগণের মধ্যে সাওতালের সংখ্যাই অধিক । চাপাই নবাবগঞ্জ-আবদুলপুর জংশন হইতে ৫৬ মাইল দূর। এই শাখা লাইন আমনুর জংশনে গোদাগাড়ীঘাট-মালদহ-কাটিহার মাঝারি মাপের লাইন পার হইয়াছে। চাপাই-নবাবগঞ্জ মহানন্দার তীরে অবস্থিত ও মালদহ জেলার একটি বাণিজ্যপ্রধান স্থান । এখান হইতে প্রচুর পরিমাণে চাউল চালান যায়। এখানকার প্রস্তুত কাসা ও পিতলের বাসন বেশ বিখ্যাত। মহানন্দার জলোচ্ছাস হইতে বন্দরটিকে রক্ষা করিবার জন্য নদীতীর দিয়া একটি উচ্চ বাধ আছে। এখানে মিউনিসিপ্যালিটি ও একটি মুনসেফ আদালত আছে । ইহার ১০১২ মাইল দক্ষিণে গোদাগাড়ীর নিকট মহানন্দ গঙ্গায় গিয়া পড়িয়াছে। চাপাই-নবাবগঞ্জের অপর পারে মহানন্দীতীরে বারঘরিয়া গ্রাম। সেখান হইতে ১২ মাইল দূরে মালদহের পথে প্রসিদ্ধ গ্রাম শিবগঞ্জ । শিবগঞ্জের সুন্দর ও সূক্ষ্ম রেশমের কাপড় বিখ্যাত। ~ নাটোর-কলিকাতা হইতে ১৪৬ মাইল দূর । সটেশনু হইতে নাটোর শহরের দূরত্ব প্রায় দুই মাইল । ইহা নারদ নামক একটি লুপ্তপ্রায় নদীর তীরে অবস্থিত। ইংরেজ আমলের গোড়া হইতে ১৮১৫ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত ইহা রাজশাহী জেলার সদর ছিল। বৰ্ত্তমানে ইহা একটি মহকুমা মাত্র। নাটোরের রাজবংশ এককালে প্রায় অৰ্দ্ধবঙ্গের অধীশ্বর ছিলেন। রামজীবন ও রঘুনন্দন নামক দুই ভ্রাতা এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। রঘুনন্দন প্রথম জীবনে পুটিয়া রাজসংসারে সামান্ত কার্য্যে নিযুক্ত হন। এইরূপ প্রবাদ আছে যে একদিন নিদ্রিত অবস্থায় তাহার মাথার উপর একটি সাপকে ফণা বিস্তার করিতে দেখিয়া পুটিয়ার রাজা দর্পনারায়ণ র্তাহাকে বলেন যে তুমি রাজা হইবে, কিন্তু তখন আমাদের জমিদারী কাড়িয়া লইও না । কিছু দিন বাদে দপনারায়ণ র্তাহাকে উকীল নিযুক্ত করিয়া ঢাকার নবাব দরবারে পাঠাইয়া দেন। ঢাকা হইতে রঘুনন্দন মুর্শিদকুলী খাঁর সহিত মুর্শিদাবাদে আগমন করেন। তাতার অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাইয়া মুর্শিদকুলী খাঁ তাহাকে প্রধান কাননগো বঙ্গাধিকারী দর্পনারায়ণের