পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৰ্ব্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ >8ዓ ভুল্লেশ্বর গভীর অরণ্যমধ্যে এই অনাদি শিবলিঙ্গকে আবিষ্কার করেন। মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়া তিনি স্বীয় নামে শিবলিঙ্গের নামকরণ করেন। তংপ্রণীত আদি মন্দির ধ্বংস হইয়া গেলে প্রায় তিনশত বৎসর পূর্বে কোচবিহারাধিপতি রাজা প্রাণনারায়ণ জল্পেশ্বরের বর্তমান মন্দির নিৰ্ম্মাণ করেন। এই মন্দিরটির শিরোভাগে একটি গোলাকৃতি গুম্বজ থাকায় উছা দূর হইতে মসজিদের মত দেখাইত। বৰ্ত্তমানে “জল্লেশ টেম্পল কমিটি” নামক সমিতি কর্তৃক ইহা সংস্কৃত ও পুনর্গঠিত হওয়ার ফলে ইহার পূর্বরূপ একেবারে পরিবৰ্ত্তিত হইয়া গিয়াছে। এখন এই মন্দির দেখিয়া ইহাকে নিতান্তই আধুনিক বলিয়া মনে হয়। জল্লেশ মন্দিরের প্রথম তলটি চতুষ্কোণাকৃতি এবং প্রত্যেক কোণে একটি করিয়া ঘর আছে । জল্পেশ্বরের পুরাতন মন্দির প্রত্নতত্ত্ববিদগণের মধ্যে অনেকে অনুমান করেন যে জল্লেশ লিঙ্গ বলিয়া যাহা অধুনা পূজিত, উহা মূলে একখণ্ড প্রস্তরমাত্র এবং স্থানীয় অরণ্যবাসী অনার্যাগণই উহার প্রতিষ্ঠাতা। অবশ্য এ সম্বন্ধে যথেষ্ট মতদ্বৈধ আছে। শিবশতনাম স্তোত্রে উল্লিখিত আছে “অহং কোচবধুপুরে জল্পেশ্বর ইতারিতঃ” অর্থাৎ কোচবিহার রাজ্যে আমি জল্পেশ্বর নামে পরিচিত। জল্লেশ মন্দিরের দক্ষিণে যে সুন্দর জলাশয়টি আছে উহা হইতে প্রাপ্ত একটি বাসুদেব মূৰ্ত্তি অপর একটি ক্ষুদ্র মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত করা হইয়াছে। জলপাইগুড়ি শহর হইতে নয় দশ মাইল পশ্চিমে ভিতরগড় নামক একটি বিস্তৃত ও স্বরক্ষিত প্রাচীন তুর্গের ধ্বংসাবশেষ আছে। প্রবাদ, ইহা পৌরাণিক যুগের পৃথুরাজার রাজধানী। ইহাতে পর পর চার প্রস্থ বেষ্টনীর মধ্যে গড় ও চারিদিকে পরিখা এবং ইগের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ভগ্ন প্রাসাদের পাশ্বে একটি প্রকাণ্ড নিৰ্ম্মল সলিলা দীঘি বিদ্যমান আছে । দীঘিটি “মহারাজ দীঘি” নামে পরিচিত এবং ইহাতে দশটি ঘাটের ভগ্নাবশেষ দুষ্ট হয়। কীচক নামক এক যাযাবর অস্পৃশ্ব জাতির সংস্পর্শে ধৰ্ম্মলোপের ভয়ে