পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলায় ভ্রমণ পতনের ইতিহাস বিজড়িত। গৌড়, রাজমহল, মুর্শিদাবাদ, হুগলী প্রভৃতি গঙ্গাতীরবর্তী জনপদগুলির ভাগ্য গঙ্গা প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গেই নিয়ন্ত্রিত হইয়াছে। বাংলার সভ্যতা ও সংস্কৃতির ইতিহাসে এই তিনটি নদীর প্রভাব সৰ্ব্বাপেক্ষ বেশী । পদ্মা ও ভাগীরথী :–হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হইতে বহির্গত হইয়া গঙ্গা সংযুক্ত প্রদেশ ও বিহারের মধ্য দিয়া রাজমহলের অনতিদূরে মালদহ জেলার পশ্চিম অংশে বাংলাদেশে প্রথম প্রবেশ করিয়াছে। মালদহ জেলা হইতেই গঙ্গা তুইভাগে বিভক্ত হইয়াছে। একভাগ দক্ষিণ পূৰ্ব্বাভিমুখী হইয়া গোয়ালন্দের নিকট ব্রহ্মপুত্রের সহিত মিলিত হইয়াছে এবং অপরভাগ দক্ষিণ পশ্চিমাভিমুখে চলিয়া গিয়াছে। গঙ্গার পূর্বধারার নাম পদ্মা এবং পশ্চিমধারার নাম ভাগীরথী। পদ্মার দ্যায় প্রবলস্রোতা নদী অতি অল্পই আছে । এই পদ্মার ভাঙ্গা-গড়ার খেলার ফলে বহু প্রাচীন প্রসিদ্ধ স্থানের চিন্তু পর্যান্ত বিলুপ্ত হইয়াছে। রাজা রাজবল্লভের বহু কীৰ্ত্তি নাশ করিয়া ঢাকা জেলায় পদ্মা কীৰ্ত্তিনাশা আখ্যাপ্রাপ্ত হইয়াছে। গোয়ালন্দের নিকট ব্রহ্মপুত্র নদের সহিত মিলিত হওয়ার পরও এই সম্মিলিত জলস্রোত “পদ্মা” নামে পরিচিত হইয়া চাদপুরের নিকট মেঘনা নদীর সহিত মিলিত হইয়াছে। এই স্থান হইতে বঙ্গোপসাগর পর্য্যন্ত এই নদীত্রয়ের সম্মিলিত জলরাশি মেঘনা নামে পরিচিত। পদ্মার উপনদী সমূহের মধ্যে পাগলা, মহানন্দ, মাথাভাঙ্গা, গড়াই, আড়িয়াল খাঁ ও চন্দন নদীর নাম উল্লেখযোগ্য । গঙ্গার মূল প্রবাহ হইতে পৃথক হইয়া ভাগীরথী (হুগলী নদী) মুর্শিদাবাদ, নদীয়া ও ২৪ পরগণা জেলার প্রান্ত দিয়া প্রবাহিত হইয়া কলিকাতা হইতে প্রায় ১০০ মাইল দূরে সাগরদ্বীপের নিকটে বঙ্গোপসাগরে পড়িয়াছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় অধিকাংশ প্রসিদ্ধ স্থান ভাগীরথীর উভয় তীরে অবস্থিত । ভাগীরথীর মোট দৈর্ঘ্য ৩১০ মাইল । ইহার উপনদী সমূহের মধ্যে নদীয়া জেলায় ভৈরব, জলাঙ্গী, মাথাভাঙ্গ ও চুণি; বৰ্দ্ধমান জেলায় অজয়, ব্রাহ্মণী, বাবলা, খাড়ি ও বাকা; হুগলী জেলায় বেহুলা, কাণানদী, কুন্তী ও বৈদ্যবাট খাল এবং হাওড়া জেলায় দামোদর ও রূপনারায়ণ নদ উল্লেখযোগ্য। ত্রিবেণীর নিকট হইতে যমুনা ও সরস্বতী নদী গঙ্গ হইতে পৃথক হইয়া যথাক্রমে ২৪ পরগণা এবং হুগলী ও হাওড়া জেলার মধ্য দিয়া প্রবাহিত হইয়াছে। এই দুইটি নদীই এখন ক্ষীণস্রোতা হইয়া খালের আকারে পরিণত হইয়াছে। নিম্ন বা দক্ষিণ অংশে যমুনা নদীর প্রবাহ খরতর দেখা যায়, কিন্তু সরস্বতী নদীর প্রায় সৰ্ব্বত্রই এক অবস্থা । হাওড়া জেলার সাকরাইলের নিকট সরস্বতী নদী ভাগীরথীর সহিত পুনরায় মিলিত হইয়াছে। ব্ৰহ্মপুত্র ;–ব্রহ্মপুত্র নদ পৃথিবীরমিক নদনদীগুলির মধ্যে অন্যতম । ইহার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮০০ মাইল । তিব্বতের অন্তর্গত মানস সরোবর এই নদের উৎপত্তি স্থান । হিমালয় পৰ্ব্বত হইতে অবতরণ করিয়া এই নদ ডিব্ৰুগড় জেলার মধ্য দিয়া আসামে প্রবেশ করিয়াছে এবং ধুবড়ী শহর হইতে ৮ মাইল দক্ষিণ পূর্ব কোণে রংপুর জেলার উত্তর পূর্ব